অতি গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় জিজ্ঞাসা ও সেগুলোর জবাব

 

অতি গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় জিজ্ঞাসা ও সেগুলোর জবাব

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

Download article as PDF   Download article as Word

প্রিয় মুসলিম ভায়েরা, আকীদা বিষয়ক বারটি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং কুরআন, সহীহ হাদীস ও বিশ্ববরেণ্য ওলামাগণের ফাতওয়ার আলোকে সেগুলোর উত্তর প্রদান করা হল। আমাদের বিশ্বাসকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এবং  সঠিক আকীদার উপর চলার জন্য এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা খুব জরুরী। আসুন, আমরা প্রশ্নগুলো পড়ি এবং সেগুলোর উত্তর জানার চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে পরিশুদ্ধ আকীদা ও বিশ্বাস সহকারে সঠিক পথে চলার তাওফীক দান করেন।

প্রশ্ন-১: জ্যোতির্বিদ, গণক, হস্তরেখা বিদ, যাদুকর প্রভৃতির কাছে যাওয়া বা তাদের কথা বিশ্বাস করার বিধান কি? 

উত্তর: কোন জ্যোতির্বিদ, গণক, হস্তরেখা বিদ, যাদুকর প্রভৃতির কাছে যাওয়া বা তাদের কথা বিশ্বাস করা বৈধ নয়। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি কোন গণৎকারের কাছে গিয়ে কোন কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, তার চল্লিশ দিনের ছালাত কবুল করা হবে না। (ছয় শতাধিক মুসলিম) গণৎকার বলতে ভাগ্য গণনাকারী দৈবজ্ঞ, জ্যোতিষী, যাদুকর সকলেই উদ্দেশ্য। রাসূল  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন, যে ব্যক্তি কোন জ্যোতির্বিদের কাছে যাবে, অত:পর সে যা বলে তা বিশ্বাস করবে, সে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দ্বীনের সাথে কুফরী করবে। (মুসনাদ আহমাদ ও সুনান গ্রন্থ সমূহ)

প্রশ্ন-২: আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে কি কসম বা শপথ করা যায়?

উত্তর: আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নাম নিয়ে শপথ করা জায়েজ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু  বলেন, সাবধান, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ পাক তোমাদেরকে তোমাদের বাপ-দাদাদের নাম নিয়ে কসম করতে নিষেধ করছেন। কেউ যদি কসম করতে চায় তবে সে যেন আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে করে অন্যথা যেন নীরব থাকে। (বুখারী ও মুসলিম)

 আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা স্বীয় বাপ-দাদা বা মা-দাদী-নানী প্রভৃতির নামে কসম করবে না। আর সত্য বিষয় ছাড়া আল্লাহ্‌র নামে কসম করবে না। (আবূ দাঊদ, নাসাঈ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যের নামে শপথ করবে সে কুফরী করবে অথবা শিরক করবে। (মুসনাদ আহমাদ)

প্রশ্ন-৩: কবরের পরিচয়ের জন্য কোন ন্যাম প্লেট বোর্ড লটকানো যাতে তার নাম মৃত্যু তারিখ প্রভৃতি লিখা থাকবে। বা এমন কোন বোর্ড লটকানো যাতে কুরআনের কোন আয়াত লিখা থাকে.. তবে তার বিধান কি?

উত্তর: কবরের উপর কোন কিছু লিখা জায়েজ নয়- না কোন কুরআনের আয়াত না নাম পরিচয়- না কোন বোর্ডের উপর না কোন পাথরের উপর আর না কবর বাঁধাই করে তার দেয়ালে। জাবের (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  নিষেধ করেছেন, কবরকে চুনকাম করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ঘর উঠাতে। (মুসলিম) তিরমিযী এবং নাসাঈর অপর বিশুদ্ধ বর্ণনায় রয়েছে, এবং তার উপর কোন কিছু লিখতেও নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ, নাসাঈ,) তিরমিযীর অপর বর্ণনায়: সেখানে মসজিদ তৈরি করতে এবং কোন বাতি জ্বালাতে নিষেধ করেছেন।

প্রশ্ন-৪: মহিলাদের কবর যিয়ারতে বিধান কি?

উত্তর: মহিলাদের কবর যিয়ারত করা বৈধ নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অধিক কবর যিয়ারতকারীনী নারীদের উপর  লানত (অভিশাপ) করেছেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ) কেননা তারা একধরণের ফিতনা, তাদের ধৈর্য কম। তাই আল্লাহ্‌ করুণা এবং অনুগ্রহ করে কবর যিয়ারত করা তাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছেন। যাতে করে তারা ফিতনায় না পড়ে এবং তাদের দ্বারা অন্যরা ফিতনায় না পড়ে। আল্লাহ্‌ সকলের অবস্থা সংশোধন করুন। -(শায়খ বিন বায)

প্রশ্ন-৫: মৃত ব্যক্তিকে দাফন করে কবরের কাছে কুরআন পাঠ করার বিধান কি? বা ইছালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে মৃতের গৃহে কুরআন পাঠ করার জন্য হাফেয-কারীদের ভাড়া করে নিয়ে আসার হুকুম কি?

উত্তর: মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরের কাছে কুরআন পাঠ করা একটি বিদআতী কাজ। কেননা এধরণের কাজ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে ছিল না। তিনি এরূপ করেন নি করার আদেশও করেন নি। বরং দাফনের পর কি করতে হয় তা বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন ব্যক্তিকে দাফন করার পর সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়াতেন এবং বলতেন, তোমাদের মৃত ভায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তার দৃঢ়তার জন্য দুআ কর, কেননা এখনই সে জিজ্ঞাসিত হবে। (আবু দাঊদ)

কবরের কাছে কুরআন পাঠ করা যদি শরীয়ত সম্মত হত বা তাতে কোন কল্যাণ থাকত তবে অবশ্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম সে নির্দেশ দিতেন এবং দলীল পাওয়া যেত। অনুরূপভাবে কোন গৃহে হাফেয-কারীদেরকে একত্রিত করে কুরআন পাঠ করে তা মৃতের রূহে বখশে দেয়াও একটি বড় ধরনের বিদআতী কাজ। শরীয়তে যার কোন দলীল নেই। সালাফে ছালেহীন তথা ছাহাবায়ে কেরামের কেউ একাজ করেননি। একজন মুসলিম ব্যক্তি যখন কোন বিপদে পড়বে বা কোন দুর্ঘটনায় পতিত হবে তখন সে ধৈর্য ধারণ করবে এবং আল্লাহ্‌র কাছে এর প্রতিদান আশা করবে। আর ধৈর্য ধারণকারীদের মত  দুআ করবে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেঊন, আল্লাহুম্মা আজুরনী ফী মুসীবাতী ওয়াখলুফলী খাইরান্‌ মিনহা। (শায়খ ইবনু ঊছাইমীন)

প্রশ্ন-৬: মীলাদুন্নবী উপলক্ষে বা কোন পীর-ওলীর উরূস উপলক্ষে যদি কোন প্রাণী যবেহ করা হয়, তবে তা খাওয়া কি জায়েজ?

উত্তর: কোন নবী বা ওলী বা যে কারো জন্মদিন উপলক্ষে যদি তার সম্মানের উদ্দেশ্যে প্রাণী যবেহ করা হয়, তবে তা গাইরুল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে যবেহ করার অন্তর্ভুক্ত হবে- যা সুস্পষ্ট শিরক। আর সে প্রাণীর মাংস খাওয়া জায়েজ নয়। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ্‌র নামে প্রাণী যবেহ করে আল্লাহ্‌ তার প্রতি  লানত (অভিশাপ) করেন। (মুসলিম)

প্রশ্ন-৬: বিদআত এবং কুসংস্কারে লিপ্ত ব্যক্তির জানাযায় শরীক হওয়া বা তাদের মৃতদের  জানাযা ছালাত আদায় করা কি বৈধ?

উত্তর: ঐ লোকের বিদআত ও কুসংস্কার যদি শিরকের পর্যায়ভুক্ত হয়, যেমন মৃত বা অনুপস্থিত বা অদৃশ্য কোন ব্যক্তি বা জিন বা ফেরেশতা বা যে কোন সৃষ্টির নিকট থেকে সাহায্য প্রার্থনা করা, বিপদাপদে উদ্ধার কামনা করা, তবে তাদের জানাযায় অংশ নেয়া বা তাদের মৃতদের উপর ছালাতে জানাযা আদায় করা জায়েজ নয়। কিন্তু যাদের কর্মকাণ্ড শিরকের পর্যায়ে পৌঁছে না যেমন সাধারণ বিদআতিগণ- যারা শির্কমুক্ত মীলাদুন্নবী পালন করে, ইসরা-মেরাজ উদ্‌যাপন করে, মুখে নিয়ত উচ্চারণ করে.. প্রভৃতি, তারা হচ্ছে পাপী-গুনাহগার। তাদের জানাযায় শরীক হওয়া যাবে এবং তাদের মৃতদের উপর ছালাতে জানাযাও আদায় করা যাবে। তাওহীদপন্থী পাপীদের ব্যাপারে যা আশা করা যায় তাদের জন্যও তা আশা করা যায়। কেননা আল্লাহ্‌ বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমা করেন না যে তার সাথে শিরক করে, এবং তিনি এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। (সূরা নিসা- ৪৮) -(সঊদী আরব স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড)

প্রশ্ন-৭: মৃত বা অনুপস্থিত কোন ব্যক্তির নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা তাদের থেকে উদ্ধার কামনা করা কি বড় ধরণের কুফরী বিষয়?

উত্তর: নিশ্চয়। মৃত বা অনুপস্থিত কোন ব্যক্তির নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা- তাদের থেকে উদ্ধার কামনা করা বড় ধরণের শির্কী কাজ। যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে ইসলাম ধর্ম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যাবে। কেননা আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে অন্য কাউকে মবূদ হিসেবে আহ্বান করে যে ব্যাপারে তার কাছে কোন প্রমাণ নেই। তার হিসাব তার পালনকর্তার কাছে আছে। নিশ্চয় কাফেররা সফলকাম হবে না। (সূরা মুমিনূন-১১৭) আল্লাহ্‌ আরও বলেন, ইনি তোমাদের প্রভু, রাজত্ব তাঁরই। তাঁকে ছেড়ে তোমরা যাদেরকে আহ্বান কর, তারা খেজুরের আঁটির উপর পাতলা আবরণেরও অধিকারী নয়। যখন তোমরা তাদেরকে ডাক তখন তারা তোমাদের ডাক শুনে না। শুনলেও তোমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। কিয়ামত দিবসে তারা তোমাদের শিরক অস্বীকার করবে। বস্তুত: আল্লাহ্‌র ন্যায় তোমাকে কেউ অবহিত করতে পারে না। (সূরা ফাতের ১৩- ১৪)

প্রশ্ন-৮: কোন নবী বা ওলী বা সৎ লোকের কবর যিয়ারতের নিয়তে সফর করার হুকুম কি? এধরণের যিয়ারত কি শরীয়ত সম্মত হবে?

উত্তর: কোন নবী বা ওলী বা সৎ লোকের কবর যিয়ারতের নিয়তে সফর করা জায়েজ নয়। বরং তা বিদআত। একথার দলীল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ হাদীছ। তিনি বলেন, (ইবাদতের উদ্দেশ্যে) তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও সফর করা যাবেনা। মসজিদে হারাম, আমার মসজিদ এবং মসজিদে আক্বছা। (বুখারী ও মুসলিম) তিনি ৎ আরও বলেন, যে ব্যক্তি এমন আমল করবে, যে ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই, তবে তা প্রত্যাখ্যাত। (বুখারী ও মুসলিম) তবে সফর না করে তাদের কবর যিয়ারত করা সুন্নাত। রাসূল ৎ বলেন, তোমরা কবর যিয়ারত করতে পার, কেননা উহা তোমাদেরকে আখেরাতের কথা স্মরণ করাবে। (মুসলিম)

প্রশ্ন-৯: ওলীদের কবর দ্বারা সাহায্য প্রার্থনা করার বিধান কি? অনুরূপভাবে তাদের কবর তওয়াফ করা, তাদের নামে নযর-মানত করা, কবরের উপর ঘর উঠানো এবং আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের জন্য তাদেরকে অসীলা বা মাধ্যম নির্ধারণ করার বিধান কি?

উত্তর: কোন নবী বা ওলীর কবর দ্বারা সাহায্য প্রার্থনা করা, তাদের নামে নযর-মানত করা, আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের জন্য তাদেরকে অসীলা বা মাধ্যম নির্ধারণ করা হচ্ছে বড় ধরণের শিরক। একারণে ব্যক্তি ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে যাবে। আর এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে চিরকাল জাহান্নাম বাসী হবে। কিন্তু কবরের তওয়াফ তার উপর ঘর উঠানো প্রভৃতি কাজ হচ্ছে বিদআত। যা গাইরুল্লাহ্‌র ইবাদত করার একটি অন্যতম মাধ্যম। অবশ্য একাজের মাধ্যমে ব্যক্তি যদি কবর বাসী থেকে কোন উপকার পাওয়া বা বিপদ দূরীভূত হওয়ার কামনা করে বা তওয়াফের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির নৈকট্য উদ্দেশ্য করে তবে তা হবে বড় শিরক। -(সঊদী আরব স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড)

প্রশ্ন-১০: মাজারে পশু যবেহ করার হুকুম কি? বা মাজারে কোন উপকার-অপকারের ক্ষেত্রে সাহায্য বা উদ্ধার প্রার্থনা করার বিধান কি?

উত্তর: মাজারে পশু যবেহ করা বড় শিরক। যে এরূপ করবে সে অভিশপ্ত। আলী (রা:) কর্তৃক বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহ্‌র নামে প্রাণী যবেহ করে আল্লাহ্‌ তার প্রতি লানত (অভিশাপ) করেন। (মুসলিম)

প্রশ্ন-১১: আল্লাহ্‌র নেক ওলী-আউলিয়াদের কবরে মসজিদ নির্মাণের বিধান কি? এধরণের মসজিদে ছালাত আদায় করা কি বৈধ?

উ: কোন ওলীর কবরে মসজিদ নির্মাণ করা জায়েজ নয়। এবং সেখানে ছালাতও আদায় করা বিধিসম্মত নয়। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ্‌ অভিশাপ করেছেন ইহুদী খৃষ্টানদের উপর। কেননা তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে কেন্দ্র করে মসজিদ নির্মাণ করেছে। (বুখারী ও মুসলিম) তিনি আরও বলেন, সাবধান, তোমাদের পূর্ববর্তীগণ তাদের নবী এবং নেক লোকদের কবর সমূহে মসজিদ নির্মাণ করেছে। সাবধান, তোমরা কবরে মসজিদ নির্মাণ করবে না। কেননা আমি তোমাদেরকে এরূপ করতে নিষেধ করছি। (মুসলিম) জাবের (রা:) কর্তৃক আরও বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন, কবরকে চুনকাম করতে, তার উপর বসতে এবং তার উপর ঘর উঠাতে। (মুসলিম)

প্রশ্ন-১২: যদি কোন ব্যক্তি এরূপ বিশ্বাস করে যে আল্লাহ্‌ তাআলা আকাশ-পৃথিবী সর্বাস্থানে সবকিছুতে বিরাজমান। এ লোকের পিছনে কি ছালাত আদায় করা যাবে?

উ: আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদাহ্‌ বিশ্বাস হল, আল্লাহ্‌ তাআলা সমগ্র সৃষ্টি জগতের ঊর্ধ্বে সর্বোচ্চ স্থান আরশে অবস্থা করেন। তিনি স্বীয় সত্বার সাথে সামঞ্জস্য শীল অবস্থায় সুমহান আরশে উন্নীত। একথার দীলল হচ্ছে, আল্লাহ্‌ বলেন, (الرحمن على العرش استوى)দয়াময় আল্লাহ্‌ আরশে সমাসীন। (সূরা ত্বাহা- ৫) তিনি আরও বলেন, তিনি সর্বোচ্চ সুমহান। (বাক্বারা-২৫৫) তিনি ঈসা (আ:) সম্পর্কে  বলেন, তিনি তাকে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন। (নিসা-১৫৮) তিনি আরও এরশাদ করেন, তিনি আকাশের অধিবাসীদের মাবূদ এবং জমিনের অধিবাসীদের মাবুদ। (যুখরুফ-৮৪) তিনি সপ্তাকাশের উপর আরশে আযীমে অবস্থান করা সত্বেও তাঁর জ্ঞান, দৃষ্টি, তত্বাবধান প্রভৃতি আমাদের সাথেই রয়েছে। তিনি এরশাদ করেন, তোমরা যেখানেই থাকনা কেন তিনি তোমাদের সাথেই রয়েছেন। (হাদীদ-৪) এরপরও কেউ যদি বিশ্বাস করে যে আল্লাহ্‌ স্বসত্বায় জমিনে বা সর্বাস্থানে বিরাজমান, তবে তা হবে কুরআন-সুন্নাহ্‌ ও এজমার বিরোধী। অজ্ঞতার কারণে কেউ যদি এরূপ বিশ্বাস করে তবে তাকে সঠিক জ্ঞান দান করতে হবে। তারপরও যদি ঐ বিশ্বাস রাখে তবে সে কাফের হয়ে যাবে- যার পিছনে ছালাত আদায় করা জায়েজ হবে না। -(সঊদী আরব স্থায়ী ফতোয়া বোর্ড)

আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে ঈমান রক্ষা করে শিরক মুক্ত জীবন গড়ার তাওফীক দিন।

================

 সংকলক:শাইখ মুহা:আব্দুল্লাহ আল কাফী

7 thoughts on “অতি গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় জিজ্ঞাসা ও সেগুলোর জবাব

  1. আসসালামুয়ালাইকুম,
    হাদি ভাই আমি নতুন আপনার সাইট এ খুব ভাল লিখা পরলাম আর অনেক কিছু জানলাম.
    আল্লাহ আপনার ভাল করুন.আমিন.

  2. Assalamu Alaikum,
    Hadi bhaiya,
    May Allah help your mission. This document is really very important for Iman and Akida.

    Also thanks for option to download as PDF format. Try to post all the articles in the PDF format.

    Zazakallahu Khairan
    Muminur Rahman

  3. Thanks Hadi Vai,,,,,Really those hadith are very very necessary for our tawhidi life,,,,,,,
    Zazak Allah kairun

    • আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদেরকে তাওহীদের আলোকিত ভূবনে সাহসের সাথে পথ চলার তাওফীক দান করেন। আসুন,আমরা সবাই সমাজ থেকে শিকর, বিদআত ও সকল কুসংস্কার দূরীকরণে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাই। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন।
      আপনার মতামতের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

  4. এ ধরণের কাজগুলো আমাদের সমাজের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ার কারণ স্বরুপ বলা যেতে পারে আমাদের দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা। কুরআন-হাদীসের আলোকে বিষয়গুলো সুন্দরভাবে আলোচনার জন্য আন্তরিক মোবারকবাদ। দুআ করি আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে বুঝে গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন এবং আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দান করুন।

    • জাযাকাল্লাহু খাইরান।
      আপনার কথা ঠিক। দ্বীন সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞানতাই মূল কারণ। তাছাড়া যতটুকু দ্বীনের আলোচনা আছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা কুরআন, সুন্নাহ এবং সহীহ আকীদা নির্ভর নয়। যার কারণে এমন অনেক শিরক, বিদআত আর কুসংস্কার আমাদের সমাজে শিকড় গেঁড়ে বসে গেছে।
      আপনার মতমতের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

আপনার মতামত বা প্রশ্ন লিখুন।