রাস্তার অধিকার: ভদ্র সমাজ গঠনে এগিয়ে আসুন

রাস্তার অধিকার:

(ভদ্র সমাজ গঠনে এগিয়ে আসুন)

লেখক: আব্দুর রাকীব মাদানি

(প্রভাষক, জামিয়াতুল ইমাম আল বুখারী, কিষণগঞ্জ 

প্রাক্তন দাঈ, খাফজী দাওয়াহ সেন্টার, সউদি আরব)

Email: a.raquib1977@yahoo.com

সম্পাদক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি

আল হামদু লিল্লাহ, ওয়াস সলাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ:

মানুষ এক ধরণের পথিক। তাকে তার জীবন চলার পথে কত পথ যে চলতে হয় এবং কত রাস্তা যে অতিক্রম করতে হয় তার হিসাব কে রাখে!

তাছাড়া রাস্তা-ঘাট নির্মাণ একটি দেশ নির্মাণের মৌলিক কাজ। তাই পৃথিবীর সমস্ত দেশ আর কোনও কাজ করুক বা নাই করুক রাস্তা নির্মাণের কাজ কিন্তু অবশ্যই করে। আর এই রাস্তার সুবিধা আমরা সকল জনগণ গ্রহণ করে থাকি। সেটা নিজ গাড়ি ড্রাইভ করার মাধ্যমে হোক কিংবা অন্যের গাড়িতে উঠে সফর করার মাধ্যমে হোক কিংবা বাইক বা সাইকেল যোগে চলাচলের মাধ্যমে হোক কিংবা পায়ে হেঁটে হোক। এছাড়া আরও অনেক সুযোগ সুবিধা আমরা রাস্তার মাধ্যমে পেয়ে থাকি যা আমাদের জানা বিষয়। কিন্তু এই পথ চলাচলের ক্ষেত্রেও যে ইসলামের বিধান রয়েছে এবং রাস্তারও যে অধিকার রয়েছে, তা হয়তো আমরা অনেকে জানি না। আসলে রাস্তা-ঘাট সকলের জন্য। সকলে তা ব্যবহার করার অধিকার রাখে। তাই আমরা অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। আর না তাদের অধিকার নষ্ট করতে পারি। এ কারণে ইসলাম রাস্তার অধিকারের কথা বলেছে এবং রাস্তা চলাচলের কিছু নিয়ম নীতি ও আদব কায়দা বলে দিয়েছে যা, সুন্দর দেশ, সুন্দর সমাজ এবং সুন্দর জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সহায়ক। এই সুন্দর লেখায় রাস্তার সেই অধিকার এবং ইসলামের দৃষ্টিতে পথ চলার যে নিয়ম নীতি রয়েছে তারই সামান্য কিছু বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।

রাস্তার মৌলিক অধিকার বর্ণনায় নবীজীর কতিপয় হাদীস

ক-আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। সাহাবারা বললেন: এ ছাড়া আমাদের যে কোনও উপায় নেই! এখানে আমরা আপসে (ভাল) আলাপ করি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (শোনার পর) বললেন: “যদি বসতেই হয়, তাহলে রাস্তার অধিকার আদায় করবে। সাহাবিগণ বললেন: রাস্তার অধিকার কী আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন: দৃষ্টি অবনত রাখা, কষ্ট না দেওয়া, সালামের উত্তর দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা।” [বুখারী মুসলিম]

খ-আবু তালহা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা উঠোনে বসে কথা-বার্তা বলছিলাম। ইতিমধ্যে আমাদের কাছে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসে দাঁড়ালেন এবং বললেন: তোমরা রাস্তায় কেন বৈঠক করছ? রাস্তায় বৈঠক করা থেকে বিরত থাকো। তখন আমরা বললাম: আল্লাহর রাসূল! কোনও মন্দ উদ্দেশ্যে নয়, এমনি আলাপ আলোচনার উদ্দেশ্যে বসে থাকি। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: যদি বসতেই চাও তাহলে রাস্তার হক আদায় করবে। (তা হচ্ছে) দৃষ্টি অবনত রাখা, সালামের উত্তর দেওয়া এবং ভাল কথা বলা।” [সহীহ মুসলিম]

গ-আবু হুরাইরাহ রা. হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাস্তায় এবং বাড়ির উঠোনে বসতে নিষেধ করলে মুসলিমগণ বললেন: এটা আমাদের জন্য সম্ভবপর নয়, এটা আমাদের সাধ্যের বাইরে। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: যদি নাই পারো, তাহলে রাস্তার হক আদায় করো। তারা বললেন: রাস্তার অধিকার কী? তিনি বললেন: দৃষ্টি অবনত রাখা, পথিককে রাস্তা বাতলে দেওয়া, হাঁচিদাতা আল হামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তর দেওয়া এবং সালামের উত্তর দেওয়া।” [আদাব আল মুফরাদ-বুখারী, হা/১০১৪ শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন]  

উপরোক্ত হাদীস সমূহ থেকে রাস্তার যে কয়েকটি অধিকার প্রমাণিত হয় তা নিম্নরূপ:

১-রাস্তায় অবস্থানকারীরা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে।

২-রাস্তায় বসা লোকেরা যেন রাস্তায় চলাচলকারীদের কষ্ট না দেয়।

৩-তারা যেন সালামের উত্তর প্রদান করে।

৪-তারা যেন পথিকদের ভাল কাজের আদেশ দেয়।

৫- মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে।

৬-পথিকদের সাথে নম্র ভাষায় কথা বলে।

৭-পথহারা ব্যক্তিকে সঠিক পথের সন্ধান দেয়।

৮-কারো হাঁচি আসলে হাঁচির উত্তর দেয়।

রাস্তায় বসা বলতে কি বুঝায়?

রাস্তায় বসা বলতে পথিমধ্যে বসা কিংবা রাস্তার দুই পাশে বসাকে বুঝায়, যেখান থেকে সরাসরি পথ চলাচলকারীদের দেখা যায় বা তাদের সাথে কথা বলা যায় বা তাদের কোনও কিছু শোনাতে চাইলে তারা শুনতে পায়। আর এখানে প্রকৃতপক্ষে শুধু বসা উদ্দেশ্য নয় বরং রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বা রাস্তায় জটলা করা বা রাস্তায় সাইকেল, বাইক, গাড়ি ইত্যাদি পার্কিং করা বা রাস্তার মাঝে গাড়ি দাঁড় করে আলাপ আলোচনা করা, রাস্তা ব্লক করে মিটিং মিছিল করা ইত্যাদি এর অন্তর্ভুক্ত। এভাবে বাড়ির সামনের বারান্দা তা যদি ঘেরা না থাকে এবং রাস্তার দিকে খোলা থাকে যেখানে বসলে সরাসরি পথ চলাচলকারীদের দেখা যায়, এটাও রাস্তায় বসার অন্তর্ভুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, আমাদের গ্রাম সমূহের এমনকি শহরেরও এটি একটি বাস্তব চিত্র যে অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে বিকালে এবং অন্য সময়েও রাস্তার ধারে, রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে, মোড়ে এবং দরজার সামনে জোটলা হয়ে বসে থাকে এবং পথ চলাচলকারীদের বিভিন্ন কিছু দেখে অপ্রীতিকর কমেন্ট করে। অনেকে সামনে কিছু না বললেও পরে তাকে কেন্দ্র করে সমালোচনা করে। অনেক সময় এসব নিয়ে অনর্থক ঝগড়া-ঝাঁটিও হয়।

এখন অবস্থা এমন যে, মহিলারাও রাস্তার পাশে বসে জোটলা পাকায় এবং একজন আল্লাহ ভীরু মানুষের সেই রাস্তা দিয়ে অতিক্রম করা কষ্টকর হয়ে যায়। পথ চলাচলকারীদের তারাও চেয়ে থাকে এবং কমেন্ট করে। অনেক মহিলার এমনও যুক্তি যে, বাড়িতে থেকে থেকে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। একটু বাইরে না ঘুরলে হয়, একটু আলাপ আলোচনা না করলে হয়, তাই রাস্তার ধারে বসে বিনা সংকোচে এই স্বাদ পূরণ করে।   

শরিয়ার দৃষ্টিতে রাস্তায় বসার বিধান:

শরীয়ার দৃষ্টিতে রাস্তায় বসার মূল বিধান হচ্ছে, রাস্তায় বসা নিষেধ। কিন্তু একান্তই যদি বসতেই হয়, তাহলে বসা জায়েজ এই শর্তে যে, সে যেন রাস্তার হক-অধিকার আদায় করে। পক্ষান্তরে সে যদি রাস্তার অধিকার রক্ষা করতে না পারে তাহলে তার জন্য রাস্তায় বসা নিষেধ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাক। সাহাবারা বললেন: এ ছাড়া আমাদের যে কোনও উপায় নেই। এখানে আমরা আপসে (ভাল) আলাপ করি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (শোনার পর) বললেন: “যদি বসতেই হয়, তাহলে রাস্তার অধিকার আদায় করবে।” [বুখারী ও মুসলিম]

রাস্তার প্রথম অধিকার: রাস্তায় অবস্থানকারীরা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে

যদি আপনি নিজেকে প্রশ্ন করেন যে, রাস্তায় অবস্থানকারীদের মূল কাজ কী? তাহলে এর উত্তর আপনার মন থেকে সহজে চলে আসবে যে, তাদের মূল কাজ হচ্ছে, যাতায়াতকারীদের দেখা। কে দেখতে কেমন, কে কী কাপড়-চোপড় পরে যাচ্ছে, কে কী নিয়ে যাচ্ছে, কিসে চড়ে যাচ্ছে ইত্যাদি। এসময় মহিলা অতিক্রম করলে অনেক পুরুষ তার দিকে উৎসুক হয়ে চেয়ে থাকে। এই দৃষ্টি থেকে সূচনা হয় অন্য কিছুর। যেমন তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা। এই ধাপ পার হলে শুরু হয় ভালবাসা ও প্রেম-প্রীতি বিনিময়। অত:পর ব্যভিচারের পথ সুগম হয়। সে কারণে বলা হয়েছে কুদৃষ্টি হচ্ছে, ব্যভিচারের প্রথম ধাপ।

মুমিন ব্যক্তির একটি গুণ হল, আত্মসম্ভ্রমী হওয়া। সে তার নিজ ও নিজ পরিবারের আত্মসম্মান বাড়িতে ও বাড়ির বাইরে রক্ষা করে। এমন লোক যখন তার পরিবার সহকারে রাস্তা দিয়ে যায়, তখন সে চায় না যে, অন্য লোকের দৃষ্টি তার মা-বোন,  স্ত্রী, কন্যা ইত্যাদির উপর পড়ুক। কিন্তু আজকাল মানুষ গাড়ীর ভিতরেও উঁকি মেরে দেখে। এই আত্মসম্মান হচ্ছে, ঈমানের পরিপূরক বিষয়। আত্মসম্মানবোধ চলে গেলে সমাজে অশ্লীলতা বৃদ্ধি পায়।    

অনেকের বাড়ির দরজা বা জানালা রাস্তার দিকে থাকে। রাস্তায় অবস্থানকারীরা তাদের দৃষ্টি যদি অবনত না রাখে তাহলে তাদের বাড়ির গোপন বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করা হয়, যা ইসলামে নিষেধ।

রাস্তায় অবস্থানকারীরা যদি তাদের দৃষ্টি অবনত না রাখে, তাহলে পথে যাতায়াতকারীদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে তারা তাদের অঙ্গভঙ্গি ও বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করে, যা ইসলামে নিষেধ।

তাই এই যুক্তি দিয়ে আপনি একে অপরের দিকে দেখাদেখির বৈধতা প্রমাণ করতে পারেন না যে, কেউ দেখাতে ভালবাসে আর কেউ দেখতে ভালবাসে তাই এখানে নিষেধের কী আছে! আর মহিলা হয়ে এই যুক্তিও খাড়া করতে পারেন না যে, তোমরা পুরুষেরা চোখের পর্দা করো আমরা যাচ্ছে তাই পরিধান করবো। কারণ এখানে সমস্যার সূত্রপাত এক পক্ষের পক্ষ থেকে সৃষ্টি হয় না বরং সমস্যা দ্বিপাক্ষিক।

        মহান আল্লাহ বলেন, “বিশ্ববাসীদের বলে দাও,তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং তাদের যৌন অঙ্গকে সাবধানে সংযত রাখে, এটিই তাদের জন্য অধিকতর পবিত্র। ওরা যা করে, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত। এবং বিশ্বাসী নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জা স্থান রক্ষা করে।” [ সূরা নূর ৩০-৩১]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কোনও পুরুষ যেন অন্য কোনও পুরুষের যৌনাঙ্গ না দেখে। আর কোনও মহিলাও যেন অন্য মহিলার যৌনাঙ্গ না দেখে।” [মুসলিম, হায়েয, অধ্যায়, নং ৩৩৮]

যদি পুরুষকে পুরুষের যৌনাঙ্গ দেখতে নিষেধ করা হয়, তাহলে পুরুষ হয়ে মহিলার যৌনাঙ্গ দেখা এবং মহিলা হয়ে পুরুষের দেখা কত বড় নিষেধাজ্ঞা হতে পারে! তা সহজে অনুমেয়। 

জারীর রা. বলেন, “আমি একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম: যদি হঠাৎ কোনও মহিলার দিকে দৃষ্টি যায়, তাহলে করণীয় কি? আল্লাহর রাসূল আমাকে তখন দৃষ্টি সরিয়ে নিতে আদেশ দেন।” [ইবনে হিব্বান, শুআইব আরনাঊত এই হাদিসের সূত্রকে হাসান বলেছেন]

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী রা. কে বলেন, হে আলী তুমি বার বার তাকানো থেকে বিরত থাক; কারণ তোমার জন্য প্রথম বার দৃষ্টিপাত বৈধ, দ্বিতীয় বার নয়।” [আবু দাউদ, সূত্র হাসান]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন, চোখের ব্যভিচার হচ্ছে, দৃষ্টি নিক্ষেপ করা।” [মুসলিম] অর্থাৎ হারামের দিকে দৃষ্টিপাত করা।

দেখা আমাদের অধিকার, দৃষ্টি অবনত রাখবো কেন?

হয়তো অনেকে প্রথমে এই প্রশ্নই উত্থাপন করবেন যে, দেখা তো আমাদের অধিকার! তাই দৃষ্টি অবনত কেন রাখবো? হাঁ দেখা প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার কিন্তু আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, প্রত্যেক অধিকারেরও একটি সীমারেখা আছে। ইসলাম ধর্ম দেখারও একটি সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে যেন মানব সমাজের সম্ভ্রম রক্ষা হয়, আত্ম সম্মান বজায় থাকে, যখন তখন মন ও মগজে যৌন সুড়সুড়ির অনুভূতি না হয়। সর্বোপরি একটি সুন্দর ভারসাম্যপূর্ণ সভ্য সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে ইসলাম দৃষ্টিরও একটি সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, যার বর্ণনা উপরে প্রদত্ত হয়েছে।

রাস্তার দ্বিতীয় অধিকার: রাস্তায় বসা লোকেরা যেন রাস্তায় চলাচলকারীদের কষ্ট না দেওয়া

অপরকে কষ্ট দেওয়ার ধরণ দুই নিয়মে হতে পারে:

এক: কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া।

দুই: কথার মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া।

কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়ার উদাহরণ হচ্ছে যেমন, রাস্তায় কষ্ট দায়ক ইট পাটকেল, কাঁচ, কাঁটা এবং নোংরা নিক্ষেপ করা, রাস্তায় পেশাব-পায়খানা করা, রাস্তা কেটে দেওয়া, রাস্তায় গর্ত করা, কাজ ক্ষেত্রে গর্ত করে তা খালি ছেড়ে দেওয়া,-যাতে পড়ে অনেক সময় মানুষের জীবন পর্যন্ত চলে যায়-বেড়া দিয়ে আংশিক বা পূর্ণ রাস্তা ঘিরে দেওয়া, রাস্তা দখল করা, রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করে যাতায়াতকারীদের যাতায়েতে বিঘ্ন সৃষ্টি করা, গাড়ির বহর বের করে পূর্ণ রাস্তা দখল করা, রাস্তায় ডিজে, সাউন্ড বক্স ইত্যাদি বাজিয়ে মানুষকে কষ্ট দেওয়া -যার ফলে অনেকে রাতে ঘুমাতে পারে না আর অনেক রোগীর রোগ এ কারণে বৃদ্ধি পায় যেমন হার্টের রোগীরা-  বিপরীতমুখী রাস্তায় চলা, সম্পূর্ণ রাস্তা ব্লক করে কিংবা আংশিক ব্লক করে তাতে মিটিং মিছিল করা, রাস্তা অবরোধ করা, অকারণে হরেন চেপে ধরে যাতায়াতকারীদের কষ্ট দেওয়া, রাস্তার গাড়ির সিরিয়াল উপেক্ষা করে আগে বেড়ে যাওয়া, খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাতায়াতকারীদের আতংকিত করা, ইচ্ছাকৃত গাড়ি চাপিয়ে দিয়ে হত্যা করা,  ট্রাফিক আইন অমান্য করা, রাস্তায় ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি রোদে মেলে দিয়ে সম্পূর্ণ বা আংশিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া, রাস্তায় থ্রেশার মেশিন ইত্যাদি দ্বারা ধান, গম, কলাই, ভুট্টা, সরিষা মাড়াই করা, রাস্তায় গরু ছাগল ছেড়ে দেওয়া বা এমন ভাবে বেঁধে দেওয়া যাতে মাঝ রাস্তায় কিংবা রাস্তার উপরে বিচরণ করতে পারে, বাড়ির পানির ড্রেন বা নালা রাস্তার দিকে করে দেওয়া, মরা পশু রাস্তায় বা রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া। এসবই হচ্ছে কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়ার উদাহরণ, যার বর্ণনা অনেক দীর্ঘ।

রাস্তায় ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি শুকাতে দেওয়ার কারণে যদি কারো মৃত্যু হয়:

রাস্তার পাশে বসবাসকারী অনেক লোককে দেখা যায়, তারা বিশেষ করে ধান, গম এবং ভুট্টার মৌসুমে রাস্তার মাঝে কিংবা রাস্তার একাংশে এসব শুকাতে দেয়। আর অনেকে মাড়াই করার থ্রেশার ইত্যাদি মেশিন মাঝ পথে স্থাপন করে মাড়াই করে। যার ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং যাতায়াতকারীদের বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় এক পাশে গাড়ি দাঁড় করে আগত বাহনকে পাস করার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় গাড়ির এক চাকা কাঁচা রাস্তায় নামানোর কারণে যাতায়াতকারীদের শরীরে ও জামাকাপড়ে কাদা-মাটি ছিটকে পড়ে। অনেক সময় গাড়ির শস্যদানার উপর দিয়ে চলে গেলে ঝগড়া বাধে। অনেক সময় শস্যদানার উপর চাকা পিছলে ড্রাইভার ও যাত্রী আহত হয়, হাত পা ভেঙ্গে যায় এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হয়। এহেন কাজ যদি মানুষের ক্ষতি এবং জীবনের হুমকি পর্যন্ত হয়, তাহলে এটা রাস্তা চলাচলকারীদের শুধু কষ্ট দেওয়া অপরাধ নয় বরং ভুলবশত: হত্যা করার অন্তর্ভুক্ত। 

উল্লেখ্য, ইসলামী ফিকহে হত্যা তিন ভাগে বিভক্ত: ইচ্ছাকৃত হত্যা, অনিচ্ছাকৃত হত্যা এবং ভুলবশত: হত্যা। এই তিন প্রকার হত্যার মধ্যে তৃতীয় প্রকার হত্যা অর্থাৎ ভুলবশত: হত্যার সংজ্ঞা হচ্ছে, কোনও ব্যক্তির এমন কাজ করা যা শরীয়ার দৃষ্টিতে তার জন্য করা বৈধ কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে নিরপরাধ কোনও ব্যক্তির হত্যা ঘটে যাওয়া। যেমন শিকার করা জায়েজ কাজ কিন্তু শিকারিকে তীর বা গুলি মারতে গিয়ে ভুলবশত: কোনও নিরপরাধ ব্যক্তিকে গুলি বা তীর লাগার ফলে সেই ব্যক্তির মৃত্যু হওয়া। অনুরূপ কুপ খনন করার সময় কেউ তাতে পড়ে মারা গেলে,তা হবে ভুলবশত: হত্যার উদাহরণ। [ফিকহুস সুন্নাহ, সাইয়্যেদ সাবিক ২/৪৩৮]

ইবনে কুদামাহ ভুলবশত: হত্যার সংজ্ঞায় বলেছেন, হত্যার উদ্দেশ্য থাকে না তারপরেও হত্যা সংঘটিত হয়ে যায়, এমন হত্যাকে ভুলবশত: হত্যা করা বলে। [আলকাফী ৪/৩]

তাই রাস্তার উপর যারা ধান, গম, ভুট্টা ইত্যাদি মেলে দেয় তারা প্রথমত: ইসলামী নিষেধাজ্ঞার উল্লঙ্ঘন করে এবং দেশীয় আইনেরও উল্লঙ্ঘন করে। অত:পর তাদের এমন কাজে যদিও কাউকে হত্যার উদ্দেশ্য থাকে না কিন্তু এসব বিষয় হত্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে তা ভুলে হত্যার অন্তর্ভুক্ত হবার দাবী রাখে।

শারঈ আইনে প্রত্যেক হত্যার বিশেষ বিশেষ দণ্ড রয়েছে। তন্মধ্যে ভুলক্রমে হত্যার দণ্ড হচ্ছে দুটি। একটি কাফফারা এবং অপরটি দিয়ত বা রক্তপণ। কাফফারা সরূপ একজন মুসলিম ক্রীতদাস স্বাধীন করতে হবে। তা করার সামর্থ্য না থাকলে বিরতি ছাড়াই ধারাবাহিকভাবে দুই মাস রোযা পালন করতে হবে। আর রক্তপণ হিসাবে নিহতের উত্তরাধিকারীদের ১০০টি উট অথবা তার সমপরিমাণ মূল্য সোনা, রূপা বা সে দেশে প্রচলিত মুদ্রা দিতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন, “কেউ কোনও মুমিনকে ভুলবশত: হত্যা করলে এক মুমিন দাস মুক্ত করা এবং তার (নিহতের) পরিজনকে রক্তপণ প্রদান করা বিধেয়।” [ সূরা নিসা /৯২]

কথার মাধ্যমে কষ্ট দেয়ার উদাহরণ:

যাতায়াতকারীদের নিন্দা করা, তাদের বিদ্রূপ করা, তাদের উদ্দেশ্য করে শিষ দেওয়া, অট্ট হাসি দেওয়া, তাদের  গালি দেওয়া, তাদের বংশ বুনিয়াদের সমালোচনা করা, তাদের অঙ্গ-ভঙ্গীর সমালোচনা করা, ইশারা ইঙ্গিতে তাদের ব্যাঙ্গ করা, অকারণে তাদের বিরক্ত করা, এমন বলা যে, ঐ দেখ একটা মাল যাচ্ছে ইত্যাদি। 

 রাস্তার তৃতীয় অধিকার: সালামের উত্তর প্রদান করা:

এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের যে সব অধিকার রয়েছে, তন্মধ্যে একটি হচ্ছে সালামের উত্তর দেওয়া। কিন্তু আমাদের বর্তমান মুসলিম সমাজের অবস্থা এমন যে, অনেকের মুখ থেকে সালাম বাক্যটিই বের হয় না। আর অনেকে সালাম দিতে লজ্জাবোধ করে। আর অনেকে লোক চেনে চেনে সালাম দেয়। রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মুসলিম ভাইর সভাব হবে সালাম দেওয়া। আর রাস্তায় থাকা লোকদের কর্তব্য হবে সালামের উত্তর দেওয়া এবং রাস্তার অধিকারের মধ্যে এটি একটি অন্যতম অধিকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, (আর যখন তোমাদের সালাম দেওয়া হয়, তখন তোমরাও তা অপেক্ষা উত্তম অভিবাদন করো অথবা ওরই অনুরূপ করো। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী। ) [সূরা নিসা/৮৬] 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এক মুসলিমের প্রতি অন্য মুসলিমের অধিকার পাঁচটি: সালামের উত্তর দেওয়া, রোগীর যিয়ারত করা, জানাজায় অংশ নেওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচির জবাব দেওয়া।” [সহীহ মুসলিম নং ২১৬২]  

সাহাবিগণ আল্লাহর রাসূলকে রাস্তার অধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন: দৃষ্টি অবনত রাখা, পথিককে রাস্তা বাতলে দেওয়া, ছিঁকদাতা আল হামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তর দেওয়া এবং সালামের উত্তর দেওয়া।” [আল আদাবুল মুফরা-বুখারী, হা/১০১৪। শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন]

রাস্তায় অবস্থানকারী ব্যক্তি যদি একজন হয়, তাহলে তাকেই উত্তর দেওয়া জরুরি। আর যদি তারা একের অধিক হয় তাহলে সকলকে উত্তর দেওয়া উত্তম, জরুরি নয়; বরং কিছু সংখ্যক উত্তর দিলে বাকিরা দায়িত্ব মুক্ত থাকবে গুনাহগার হবে না।

অবশ্যই এটা মন্দ সভাবের অন্তর্ভুক্ত যে, কেউ রাস্তায় বসে থাকবে আর সালামের উত্তর দিবে না। কিংবা পরিচিত ব্যক্তি হলে দিবে আর অন্যের দিবে না। কিংবা নিজের মান-মর্যাদার সমতুল্য হলে তার জবাব দিবে কিন্তু নিজের থেকে সম্মানে কম হলে তাকে দিবে না, যেমনটি কিছু অহংকারী লোকের সভাব। এটা রাস্তার অধিকার হনন এবং পাপকাজ। তাই যে মানুষের পথে অবস্থান করবে তাকে রাস্তার অধিকার আদায় করত: সালামের জাবাব দিতে হবে।

রাস্তার চতুর্থ এবং পঞ্চম অধিকার: ভাল কাজের আদেশ এবং মন্দ কাজের নিষেধ প্রদান:   

রাস্তায় অবস্থান করার সময় সেখানে ভাল-মন্দ দেখতে পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই এসময় ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ করা উচিৎ; নচেৎ মন্দ কর্ম বেড়েই চলবে এবং সমাজ আরও মন্দের দিকে চলে যাবে।

রাস্তায় থাকার সময় যদি দেখা যায় কারো কোনও জিনিস পড়ে গেল তাহলে তাকে ডাক দিয়ে তা দিয়ে দেওয়া, আযান হয়ে গেলে তাদের মসজিদে যেতে বলার আদেশ করা, রাস্তায় কষ্টদায়ক কোনও কিছু থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া বা পথিককে তা থেকে সতর্ক করে দেওয়া, রাস্তায় কেউ গরু-ছাগল বেঁধে দিলে তা থেকে নিষেধ করা, রাস্তায় কেউ নোংরা ইত্যাদি ফেললে নিষেধ করা, পথিকের এক্সিডেন্ট হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসালয়ে পৌঁছে দেওয়া, পথিকের রোদ-বৃষ্টি থেকে আশ্রয় প্রয়োজন হলে তার যথাসম্ভব বন্দবস্ত করে দেওয়া, পানির প্রয়োজন হলে পানির স্থান দেখিয়ে দেওয়া বা নিজে ব্যবস্থা করে দেওয়া, পথিকের উপর কেউ অত্যাচার করলে তা থেকে বাধা দেওয়া, মহিলার সাথে ইভ টিজিং হলে তা থেকে বাধা দেওয়া, বেপর্দা মহিলাকে উপদেশ দেওয়া, রাস্তার উপর গান-বাজনা, গিবত, চুগললখোরি, গালমন্দ করা থেকে নিষেধ করা, এসব এবং আরও অনেক কিছু ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধের অন্তর্ভুক্ত। যে রাস্তার এসব অধিকার পালন করতে অক্ষম সে যেন রাস্তায় অবস্থান না করে যেন তার গুনাহ না হয়।      

রাস্তার ষষ্ঠ অধিকার: পথিকদের সাথে নম্র ভাষায় কথা বলা:

‘রাস্তার ভাষা’ এবং ‘বাজারি কথা-বার্তা’ বলে আমাদের সমাজে কিছু পরিভাষা আছে। এ কারণে যে, মানুষ তার সন্তানদের মিষ্টভাষী ও ভদ্র ভাষী করতে চায়। এর উদ্দেশ্যে তারা তাদের সন্তানদের বাড়িতে ভাল ভাষা ও সুন্দর ব্যবহারও শিক্ষা দেয় কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় সেই বাচ্চা রাস্তা থেকে এক জঘন্য শব্দের আমদানি করেছে।এভাবে বাচ্চারা গাল-মন্দের শব্দ শিখে এবং ধীরে ধীরে তা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। এটাই হল রাস্তার ভাষা।

রাস্তায় বিশেষ করে যানবাহনের ড্রাইভারদের ভাষা সম্পর্কে আমরা জানি, যা বলা তো দূরের কথা শোনতেও লজ্জা লাগে। অনুরূপ সমাজে কিছু লোকজন এমনও রয়েছে যাদের মুখে কোনও লাগাম থাকে না, এদের যেন কোনও ইসলামী তরবিয়ত হয় নি, এরা যেন লজ্জা হারিয়ে ফেলেছে, এরা বড় ছোট ও আশে পাশে কে আছে তাদের কোনও তোয়াক্কা করে না, তারা একটি ভাল কথাও গাল-মন্দের কুরুচিপূর্ণ শব্দ দিয়ে শুরু করে!

রাস্তায় অবস্থানকারীরা অনেক লোককে যাতায়াত করতে দেখে। তাদের অনেক ক্ষেত্রে কথা বলার প্রয়োজন হয়, কিছু জিজ্ঞাসারও প্রয়োজন হয়। তাই ইসলাম তাদের সাথে ভাল ও ভদ্র ভাষায় কথা বলার আদেশ দিয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জান্নাতে এমন কিছু কক্ষ থাকবে যার বাহিরটা ভিতর থেকে দেখা যাবে এবং যার ভিতরটা বাহির থেকে দেখা যাবে, তখন আবু মালিক আল আশআরী জিজ্ঞাসা করলেন: সেই ঘরগুলো কার জন্য হবে আল্লাহর রাসূল? তখন আল্লাহর রাসূল  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: যে সুন্দর-নম্র কথা বলে, অপরকে খাবার খাওয়ায় এবং লোকেরা যখন নিদ্রা যায় তখন সে কিয়ামুল্লাইল করে।” [সহীহুত তারগীব নং ৯৪৬]

রাস্তার সপ্তম অধিকার: পথিককে রাস্তা বাতলে দেওয়া

পথ চলার সময় অনেকে জিজ্ঞেস করে: এই পথ কোথায় শেষ হবে বা কোন্ পথ দিয়ে গেলে অমুক স্থানে পৌঁছাতে পারবো? আর অনেকে পথ ভুলে যায়। তাই রাস্তায় অবস্থানকারী লোকদের তাকে তার গন্তব্য স্থানের পথ বাতলে দেওয়া কর্তব্য। এটা যেমন মানবতা তেমন রাস্তার অধিকারও বটে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “পথ হারা স্থানে পথিককে সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া একটি সদকা।” [তিরমিযী নং১৯৫৬. ইবনে হিব্বান নং ৫২৯ সূত্র হাসান]

রাস্তার অষ্টম অধিকার: হাঁচির উত্তর দেওয়া

সাধারণ অবস্থায় ইসলামে হাঁচি দাতা ও হাঁচি শ্রবণকারীর বিধান রয়েছে কিন্তু রাস্তায় অবস্থানকারী লোক যদি যাতায়াত কারী কোনও ব্যক্তিকে হাঁচি দিয়ে হাঁচির দুআ পড়তে শুনে তাহলে তার উপর উত্তর দেওয়া আরও বেশী জরুরি হয়ে যায়।সাহাবিগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাস্তার অধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি  বলেন, (রাস্তার অধিকার হচ্ছে) “দৃষ্টি অবনত রাখা, পথিককে রাস্তা বাতলে দেওয়া, ছিঁকদাতা আল হামদুলিল্লাহ বললে তার উত্তর দেওয়া এবং সালামের উত্তর দেওয়া।” [আদাব আল মুফরাদ, বুখারী (১০১৪) শাইখ আলবানী সহীহ বলেছেন]

এ ছাড়াও অন্ধ ব্যক্তিকে রাস্তা পার করে দেওয়া, বোঝা তুলতে সাহায্য করা এবং অত্যাচারিত ব্যক্তির সাহায্যার্থে হাত বাড়িয়ে দেওয়া রাস্তার অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাহবিহী তাসলীমান মাযীদা। 

লেখকের ফেসবুক আইডি:
https://www.facebook.com/araquib2    

One thought on “রাস্তার অধিকার: ভদ্র সমাজ গঠনে এগিয়ে আসুন

আপনার মতামত বা প্রশ্ন লিখুন।