নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে? (সাথে ডা: জাকির নাইকের বিশ্লেষণ)


নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে?

শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ:)

লেখাটি ডাউনলোড করুন (১৩৫কেবি) 

প্রশ্ন : যদি কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে চাঁদ দেখা যায়, আর  আমি যে দেশে বসবাস করি, সেখানে শাবান ও রমজান মাস ত্রিশ দিনে পুরো করা হয়, তাহলে আমি কী করব? রমজান প্রসঙ্গে মানুষের মতপার্থক্যের কারণ কী?

জবাব : আলহামদুলিল্লাহ, আপনার জন্য রোযা আপনার দেশের লোকদের সাথে থাকাই আবশ্যক। তারা যদি রোযা রাখে তাদের সাথে রোযা রাখবেন; আর তারা যদি রোযা না রাখে তবে আপনিও তাদের সাথে রোযা রাখবেন না। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»

‘‘তোমরা যেদিন রোযা রাখবে সেদিনই রোযা, যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানি করবে সেদিনই কোরবানি।’’ [তিরমিযী : ৬৯৭]

দ্বিতীয়ত. ইখতিলাফ ভাল জিনিস নয়, তাই আপনার দেশের সাথে থাকাই আপনার জন্য জরুরি ও সঙ্গত। আপনার দেশের মুসলিমগণ যখন রোযা করবেন না, আপনি তাদের সাথে রোযা না করবেন। আর যখন তারা রোযা রাখবে আপনি তাদের সাথে রোযা রাখবেন।

আর মত পার্থক্যের কারণ হচ্ছে, কেউ চাঁদ দেখে, কেউ চাঁদ দেখে না। অতপর যারা চাঁদ দেখে, অন্যরা তাদের উপর ভরসা করে, তাদেরকে বিশ্বাস এবং তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করে। আবার কখনো তাদের বিশ্বাস কিংবা তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করা হয় না, ফলে ইখতিলাফ সংঘটিত হয়। কোনো দেশ চাঁদ দেখে এবং চাঁদ দেখার ফয়সালা দেয়, ফলে দেশবাসী রোযা রাখে অথবা ইফতার করে। আর অন্য দেশ এ দেখার উপর ভরসা কিংবা বিশ্বাস করে না- ভৌগলিক কিংবা রাজনৈতিক ইত্যাদি কারণে।

সকল মুসলিমের জন্য আবশ্যিক হল চাঁদ দেখেই রোযা রাখবে আবার চাঁদ দেখে রোযা ভাঙ্গবে করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস ব্যাপক :

«إِذَا رَأَيْتُمُ الْهِلَالَ فَصُومُوا، وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَأَفْطِرُوا، فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَصُومُوا ثَلَاثِينَ يَوْمًا»

‘‘যখন তোমরা চাঁদ দেখবে রোযা রাখবে, আবার যখন চাঁদ দেখবে ইফতার করবে। আর আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন হয়, তবে সংখ্যা ত্রিশ দিন পূরণ করবে।’’ [মুসলিম : ১০৮১]

যদি সকলে চাঁদ দেখা বিশ্বাস করে এবং মনে করে যে, বাস্তবিকই তা দেখা গেছে, তবে সে হিসেবে রোযা রাখা ও ইফতার করা ওয়াজিব। হ্যাঁ, যদি বাস্তবতার ব্যাপারে মত পার্থক্যের সৃষ্টি হয়, আর কেউ কাউকে বিশ্বাস না করে, তখন আপনার জন্য সঙ্গত হবে আপনার দেশের মুসলমানদের সাথে রোযা রাখা এবং তাদের সাথে ইফতার করা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»

‘‘তোমরা যেদিন রোযা রাখবে সেদিনই রোযা, যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানি করবে সেদিনই কোরবানি।’’ [তিরমিযী : ৬৯৭]

ইবনে আব্বাস -রাদিয়াল্লাহু আনহু- থেকে প্রমাণিত, কুরাইব তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, শাম দেশের লোকেরা জুমুআর দিন রোযা রেখেছে। ইবনে আব্বাস বললেন : আমরা চাঁদ দেখেছি শনিবার। সুতরাং আমরা নতুন চাঁদ না দেখা পর্যন্ত অথবা  ত্রিশ দিন পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত রোযা রেখে যাব। তিনি শামবাসীদের চাঁদ দেখার উপর আমল করেন নি, যেহেতু উভয় দেশের মাঝে দূরত্ব অনেক বেশী এবং উভয়ের উদয়স্থলও ভিন্ন। তাঁর দৃষ্টিতে এটা ইজতেহাদের বিষয়। ইবনে আব্বাস এবং তার অনুসরণ করে যারা বলেছেন, নিজ দেশের সাথে রোযা এবং নিজ দেশের সাথে ইফতার করার জন্য, তাদের মতই আমাদের জন্য অনুসরণীয়। (সহীহ সুনান নাসাঈ: ২১১০,)

[শায়খ আব্দুল আজীজ বিন বায রাহিমাহুল্লাহ, মজমু ফাতওয়া ওয়ামাকালাত মুতানাওয়েয়াহ]

শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায

অনুবাদ : সানাউল্লাহ নজির আহমদ 

সম্পাদনা : ইকবাল হোছাইন মাছুম

আলী হাসান তৈয়ব

﴿ هل يصوم مع بلده أو مع أي بلد رأى الهلال؟ ﴾

« باللغة البنغالية »

الشيخ عبد العزيز بن عبد الله بن باز

উৎস: ইসলাম ডাউজ ডট কম

এ প্রসঙ্গে ডাক্তার জাকির নাইকের চমৎকার বিশ্লেষণ দেখুন (ইংরেজী)

5 thoughts on “নিজ দেশের লোকদের সাথে রোযা রাখবে, না চাঁদ দেখা যে কোনো দেশের সাথে? (সাথে ডা: জাকির নাইকের বিশ্লেষণ)

  1. Fatwas of Ibn Baz>Volume 15>Book on Fasting>Beginning and end of Ramadan
    I was asked by many brothers about the ruling on depending on the radio to start and break their fast and if this matches the authentic Hadith stating: Start fasting on seeing it (the new moon of Ramadan) and give up fasting on seeing it (the new moon of Shawwal)… If it is proven that the new moon has been observed by a just witness in a Muslim country, should the neighboring countries follow this country? If the answer is yes, is there any evidence? Should we consider the different places of these countries?

    Answer: It is authentically reported that the Prophet (peace and blessings be upon him), through many chains of narration, said: Start fasting on seeing the new moon (of Ramadan) and give up fasting on seeing the new moon (of Shawwal). And if the sky is overcast (and you cannot see it), calculate thirty (days of Sha`ban). According to another narration: ..then complete the thirty days (of Sha’ban). According to another narration: then complete the thirty days of Sha’ban.

    It is authentically reported that the Prophet (peace and blessings be upon him) said: Do not fast until

    (Part No. 15; Page No. 91)

    you see the new moon or complete the term (thirty days), then fast until you see the new moon or complete the term (thirty days). There are many Hadiths in this regard that indicate that only sighting the crescent or completing (thirty days) is considered but calculations of astronomy are not considered. This is what is right and the unanimous opinion of considered scholars. The Hadiths do not indicate that all the people should sight the new moon but the meaning is to verify that by the just and fair evidence. Abu Dawud reported, with a good chain of narration, from Ibn `Umar (may Allah be pleased with them both), that he said: The people looked for the new moon, so I informed the Messenger of Allah (peace be upon him) that I had sighted it. He fasted and commanded the people to fast. Ahmad and Ahl-ul-Sunan (authors of Hadith compilations classified by jurisprudential themes) reported the following Hadith, which Ibn Khuzayma and Ibn Hibban judged it as authentic, from Ibn `Abbas (may Allah be pleased with him): That a Bedouin came to the Prophet (peace and blessings be upon him) and said, I have sighted the new moon. The Prophet (peace and blessings be upon him) asked him: “Do you witness that none has the right to be worshipped but Allah and that Muhammad is the Messenger of Allah?” The Bedouin said: Yes I do. The Prophet said: O Bilal, tell the people to fast tomorrow. It is also narrated by

    (Part No. 15; Page No. 92)

    `Abdul-Rahman ibn Zayd ibn Al-Khattab: that he delivered a speech on the day of doubt and said: I used to sit with the Companions of the Prophet (peace be upon him). I asked them and they told me that he (peace be upon him) said: Observe fast on sighting it (the new moon) and break (fast) on sighting it (the new moon), but if the sky is cloudy for you, then complete the number of thirty days. If two Muslim witnesses that they have seen the new moon, then you should begin (i.e. Fasting at the outset of Ramadan) or break your fasting (at the end of Ramadan). Related by Ahmad. Al-Nisa’y also narrated it but his narration does not specify the witnesses to be: “two Muslim”.

    Likewise, the emir of Makkah Al-Harith ibn Hatib said: The Messenger of Allah (peace be upon him) took our pledge that we should embark on the rituals upon the sighting (of the new moon). If we cannot sight it but two reliable people bear witness to the sighting, we should observe the rituals on the basis of their witness. Related by Abu Dawud and Al-Darqutny. Al-Darqutny said, this is a connected successive authentic chain of narration. These Hadiths indicate that it is enough to sight the new moon of Ramadan by one just witness but there must be two just witnesses to sight the new moon at the end of Ramadan and other months as understood by the mentioned Hadiths. Most scholars maintained this view and it is the right view that has clear evidence in its support.

    Thus, it is evident that the sight intended is the verification of the new crescent through the legal evidence and it does not mean that every person should sight the new moon. If a Muslim country that applies the Islamic law such as the Kingdom of Saudi Arabia broadcasts that it verified the sighting of Ramadan, Shawwal, or Dhul-Hijjah’s new moon,

    (Part No. 15; Page No. 93)

    all its subjects have to follow it.

    Other countries also have to follow it as thought by most of scholars as the Prophet (peace and blessings be upon him) said: The month (may be) 29 nights (i.e. days), and do not fast until you see the moon, and if the sky is overcast, then complete Sha‘ban as thirty days. Related by Al-Bukhari in his Sahih (authentic) Books of Hadith from Ibn `Umar (may Allah be pleased with them both). It is also reported by Muslim in the following narration: Start fasting upon seeing the new moon (of Ramadan) and give up fasting on seeing the new moon (of Shawwal). If the sky is overcast (and you cannot see it), calculate thirty (days of Sha`ban.) Al-Bukhari reported from Abu Hurayrah (may Allah be pleased with him) that the Prophet (peace and blessings be upon him) said: Start fasting upon seeing the new moon (of Ramadan) and give up fasting on seeing the new moon (of Shawwal). And if the sky is overcast (and you cannot see it), complete thirty days of Sha`ban. Muslim reported the Hadith in this narration but said: If the sky is overcast (and you cannot see it), count the month as thirty days. Therefore, it is apparent that these Hadiths and others to the same effect are equally applied to all Muslims.

    In his commentary on Al-Muhadhab [a book in the Islamic law according to the Shafi`i school of law], Al-Nawawy (may Allah be merciful to him) related that Imam ibn Al-Mundhir (may Allah be merciful to him) said: This is the saying of Al-Layth ibn Sa`d, Imam

    (Part No. 15; Page No. 94)

    Al-Shafi’y and Imam Ahmad (may Allah be merciful with them all). He i.e. Ibn Al-Mundhir, said: I know also that it is the saying of Al-Madany i.e. Malik, and Al-Kufy i.e. Abu Hanifah (may Allah be merciful with them). A group of scholars said the ruling of sight would be general if the moon sighting locations give the same outcome but if they differ, each group of people may have their own sighting.

    Imam Al-Tirmidhy (may Allah be merciful to him) attributed that to the people of knowledge who raised evidence supporting that through the Hadith reported by Muslim in his Sahih collection of Hadith from Ibn `Abbas (may Allah be pleased with them) that Kurayb came to him in Al-Madinah from the Levant (the region covering Syria, Lebanon, Jordan, and Palestine) at the end of Ramadan and told him he sighted the new moon in the Levant on Friday night and that Mu`awiyah and the people fasted accordingly. Ibn `Abbas said: But we saw it on Saturday night and so we still fast until we sight the new moon or complete the term thirty days. Kurayb said: Do you not consider the sighting and fasting of Mu`awiyah as enough? Ibn `Abbas said, “No as this is what the Prophet (peace and blessings be upon him) commanded us to do”. They argue that this indicates that Ibn `Abbas is of the opinion that the sighting is not general and that every country has its own sighting if the sighting locations are different and they said that the sighting locations in Al-Madinah area are not united with the sight locations in the Levant (the region covering Syria, Lebanon, Jordan, and Palestine). Others said that Ibn Abbas did not consider

    (Part No. 15; Page No. 95)

    the sighting of the people of the Levant (the region covering Syria, Lebanon, Jordan, and Palestine) as only Kurayb gave witness to that while the witness of only one witness is not considered for sighting the new moon to end the month and is only considered for sighting the new moon at the beginning of the month.

    This issue was submitted to the Council of Senior Scholars in the Kingdom of Saudi Arabia in the second tournament held in Sha’ban in the year 1392 A.H. And they agreed that the preponderant opinion in this regard is that the matter is flexible and it is permissible to follow any one of the two opinions as thought by the Kingdom’s scholars.

    I said, this saying reconcile all evidences and sayings of scholars. If this is known, scholars in every country should pay attention to this issue at the beginning and the end of the month and should agree on what is closer to the right Ijtihad (juristic effort to infer expert legal rulings). They should then work accordingly and inform people and those in charge about that and the Muslim public should follow them in this regard. They should not differ in that as it might cause to divide the people and spread many gossips if the country was non-Muslim.

    The Muslim countries should depend on what the scholars say and oblige people to fast or break their fast according to the mentioned Hadiths and in conformity with the binding obligations to prevent the subjects from doing what Allah forbids.

    It is known that Allah may guide the ruler to prevent evils that may not be prevented by the Qur’an i.e. Mere admonition.

    (Part No. 15; Page No. 96)

    I ask Allah to guide us and all Muslims to comprehend the religion, hold fast to it, and judge by it and beware of what contradicts it. Allah is the Most Bountiful, the Most Generous. Peace and blessings be upon the Prophet Muhammad, his family and companions.

    The President of the Islamic University in Al-Madinah Al-Munawwarah
    Source:http://www.alifta.com/Search/ResultDetails.aspx?languagename=en&lang=en&view=result&fatwaNum=&FatwaNumID=&ID=2756&searchScope=14&SearchScopeLevels1=&SearchScopeLevels2=&highLight=1&SearchType=exact&SearchMoesar=false&bookID=&LeftVal=0&RightVal=0&simple=&Se

  2. بسم الله الرحمن الرحيم কুরআন ও হাদীসের আলোকে চাঁদ ও ঈদের গননা পবিত্র কুরআনে চাঁদের হিসাব (১) মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজন ও বিশেষভাবে হজ্জের জন্যে একটি সুনির্দিষ্ট চাঁদের হিসাব জরুরী: আল্লাহ তা’আলা বলেন : يَسْئَلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِ – قُلْ هِىَ مَوَاقِيْتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجَّ “লোকেরা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বলুন: এটা মানুষ ও হজ্জের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় নির্দেশক।” [সূরা বাক্বারাহ : ১৮৯ আয়াত] শিক্ষণীয় দিক : আয়াতটি দ্বারা সুস্পষ্ট হয়, মানবজাতির জন্য চাঁদের হিসাবে দিন-তারিখ ও হজ্জের সময় নির্ধারণ একই হতে হবে। যেন তারা সবাই চন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী দিন, মাস ও বছর গণনা এবং হজ্জ, সিয়াম, ঈদ প্রভৃতি ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো একই সাথে উদযাপন করতে পারে। “এটা মানুষ ও হজ্জের জন্য সুনির্দিষ্ট সময় নির্দেশক” বক্তব্যের দ্বারা কোন বিশৃংখল দিন-তারিখের হিসাব সৃষ্টি করার মোটেই উদ্দেশ্য নেই, বরং সুশৃংখল দিন-তারিখ ও সময় নির্ধারণই উদ্দেশ্য। সুতরাং আয়াতটির আলোকে এটা সম্পূর্ণ বিবেক ও বাস্তবতা বিরোধী যে, কেবল হজ্জ পালনের ক্ষেত্রেই মুসলিমদের তারিখ এক হবে এবং অন্যান্য ধর্মীয় নির্দেশগুলোর ক্ষেত্রে চাঁদ দর্শনের আঞ্চলিকতাই প্রাধান্য পাবে। (২) প্রতিদিনের সময় নির্ধারণের জন্য যেভাবে সূর্যকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে, তেমনি সুনির্দিষ্টভাবে মাস ও বছর গণনার জন্য একটি চাঁদের হিসাবই আল্লাহর পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট: আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন : هُوَ الَّذِىْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُوْرًا وَّقَدَّرَه‘ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِيْنَ وَالْحِسَابَ – مَا خَلَقَ اللهُ ذلِكَ اِلاَّ بِالْحَقِّ – يُفَضِّلُ الْآيتِ لِقَوْمٍ يَّعْلَمُوْنَ “তিনিই (আল্লাহ তা‘আলা) সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং এর মনযিল নির্দিষ্ট করেছেন, যাতে তোমরা বছর গণনা ও সময়ের হিসাব জানতে পার। আল্লাহ এগুলো নিরর্থক সৃষ্টি করেন নি। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য তিনি এসব নিদর্শন বিশদভাবে বিবৃত করেন।”[সূরা ইউনুস : ৫ আয়াত] লক্ষ্যণীয় দিক : যদি চাঁদের তারিখ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হয়, তাহলে চন্দ্র মাসের হিসাবটি কি নিরর্থক হয় না? আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন : وَجَعَلْنَا الَّيْلَ وَالنَّهَارَ آيَتَيَنِ فَمَحُوْنَا آيَةَ الَّيْلِ وَجَعَلْنَا آيَةَ النَّهَارِ مُبْصِرَةً لِّتَبْتَغُوْا فَضْلاً مِّنْ رَّبِّكُمْ وَلِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السِّنِيْنَ وَالْحِسَابِ “আমি রাত ও দিনকে করেছি দু’টি নিদর্শন; এরপর রাতের নিদর্শনটি করেছি নিষ্প্রভ আর দিনের নিদর্শনকে করেছি আলোকময়, যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং যাতে তোমরা বছরের সংখ্যা ও হিসাব স্থির করতে পার।”[সূরা বানী ইসরাঈল : ১২ আয়াত] লক্ষ্যণীয় দিকঃ একই দিনে ভূখন্ড ভিত্তিক বিভিন্ন তারিখ হলে কিভাবে সঠিক হিসাব হল? আমরা কি উম্মাতের ধারাবাহিক ‘আমলকে কুরআনের দাবীর বিরোধীতায় পেশ করতে পারি? কক্ষনো না। উপরের দু’টি আয়াত থেকে প্রমাণিত হল, সূর্য প্রতিদিনই উদয় ও অস্ত যাওয়ায় সালাতের হিসাবটিও প্রত্যেক দিনের স্থানীয় সূর্যের সময়ের অনুযায়ীই হতে হবে। পক্ষান্তরে চাঁদ মাসে একবারই উদয় ও অস্ত যাওয়ায় এর হিসাব মাস ভিত্তিক – আর এ কারণেই সিয়াম, ঈদ ও হজ্জ পালন পৃথিবীর যে কোন স্থানে চাঁদের খবর বিশ্বস্তসূত্রে পৌঁছালেই তা পালন করতে হবে। যদি চাঁদ সূর্যের ন্যায় প্রতিদিনই উদয় বা অস্ত যেত – তাহলে সূর্যের ন্যায় স্থানীয় চাঁদের উদয় ও অস্ত হিসাবেই হিজরী তারিখ, মাস ও বছর গণনা করতে হত। সুতরাং সুস্পষ্ট হল, সূর্যের হিসাবটি স্থানীয় (LOCAL), পক্ষান্তরে চাঁদের হিসাবটি সমগ্র বিশ্ব কেন্দ্রিক (GLOBAL) (৩) হারাম বা সম্মানিত মাসগুলো নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট চন্দ্র মাসের হিসাব জরুরী : আল্লাহ তা‘আলা বলেন : يَسْئَلُوْنَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِيْهِ – قُلْ قِتَالٍ فِيْهِ كَبِيْرٌ – وَصَدُّ عَنْ سَبِيْلِ اللهِ وَكُفْرٌبِهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَام- وَاِخْرَاجُ اَهْلِه مِنْهُ اَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ – وَالْفِتْنَةُاَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ “লোকেরা আপনাকে হারাম মাসের [হারাম মাস: ‘রজব’, ‘যিলক্বাদ’, ‘যিলহাজ্জ’ ও মুহাররম – এই চারটি মাসকে জাহেলিয়াতের যামানাতেও হারাম বা সম্মানিত মাস হিসাবে গণ্য করা হত। এ মাসগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ অপছন্দনীয় ছিল। ইসলামও ঐ মাসগুলোকে সম্মান দিয়েছে। (সালাহুদ্দীন ইউসুফ, আল-কুরআনুল কারীম মা‘আ উর্দূ তরজমা ও তাফসীর (রিয়াদ), উক্ত আয়াতের তাফসীর, ৮৭ পৃ:)] যুদ্ধ করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন : তাতে যুদ্ধ করা ভীষণ অন্যায়। কিন্তু আল্লাহর পথে বাধা দেয়া, আল্লাহকে অস্বীকার করা, মাসজিদুল হারামে (প্রবেশে) বাঁধা দেয়া এবং তার বাসিন্দাদের সেখান হতে বের করে দেয়া আল্লাহর কাছে তদপেক্ষা অধিক অন্যায়। আর ‘ফিতনা’ হত্যার চেয়ে বড় অন্যায়।”[সূরা বাক্বারাহ : ২১৭ আয়াত] শানে-নুযূল : নবী (স)এর যামানায় একদল মুসলিম সৈন্যের হাতে কাফিরদের একজন নিহত হয় এবং কয়েকজন বন্দি হয়। মুসলমিগণ এটা জানতো না যে, রজব মাস শুরু হয়ে গেছে। (অর্থাৎ রজব মাসের চাঁদ উদয় হয়েছে)। তখন কাফিরগণ মুসলিমদের প্রতি এই অভিযোগ দিতে থাকল যে, দেখ সম্মানিত মাসের সম্মানের প্রতি তারা গুরুত্ব দেয় না। তখন উক্ত আয়াত নাযিল হয়।”[সালাহুদ্দীন ইউসুফ, আল-কুরআনুল কারীম মা‘আ উর্দূ তরজমা ও তাফসীর (রিয়াদ), উক্ত আয়াতের তাফসীর, ৮৭ পৃ:। বিস্তারিত : তাফসীরে কুরতুবী, ইবনে কাসির, মাযহারী। ইমাম সুয়ূতী (রহ) ‘দুররে মানসুরে’ (১/৬০০) হাদীসটির সনদকে সহীহ বলেছেন [ইবনে জারীর, ইবনে মুনযির, ইবনে আবী হাতেম, তাবারানী, বায়হাক্বী সূত্রে : তাফসীরে কুরতুবী (মিশর : মাকতাবাতুল তাওফিক্বিয়াহ) ৩/৩৬ পৃ:] শিক্ষণীয় দিক : সুস্পষ্ট হল, মুসলিম সৈন্যগণ ভুল গণনা বা চাঁদ না দেখতে পেলেও মাস গণনার ধারাবাহিকতা স্বাভাবিক হিসাবেই গণ্য হয়। সাথে সাথে মুসলিমদের ভুলেরও স্বীকার করা হয়। যদিও এর পূর্বে মুসলিমদের প্রতি কাফিরদের অন্যায় ব্যবহার ছিল অনেক বেশী গুরুতর অপরাধ (আয়াতের শেষাংশের দাবীনুযায়ী)। সুতরাং বর্তমান যামানাতে চাঁদ গণনার হিসাব বিশ্বব্যাপী এক না হলে অনুরূপ ভুল বুঝাবুঝির সমাধান কিভাবে হবে? অথচ এখন সর্বাধুনিক দ্রুতগামী যুদ্ধাস্ত্র ও বিমানের ব্যবহার হচ্ছে। তাহলে কি এক অঞ্চলের মুসলিমদের জন্য আক্রমণ জায়েয হবে, আর অন্য অঞ্চলের জন্য হারাম হবে? সুতরাং এ আয়াতের দাবীও এটাই যে, বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের মধ্যে চাঁদের হিসাব একটিই হতে হবে। অন্যথায় আমীরুল মু’মিনীন বা খলিফাতুল মুসলিমীনের জন্য সমগ্র বিশ্বব্যাপী হজ্জ এবং জিহাদ বা ক্বিতাল সংক্রান্ত নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হবে। কেননা ক্ষেত্র বিশেষে চাঁদ দর্শনে অঞ্চল ভিত্তিক ২ (দুই) দিনেরও ব্যবধান হতে দেখা গেছে। সহীহ হাদীসের আলোকে চাঁদের বিধান মাসআলা – ১ : চাঁদের হিসাবে মাস ২৯ দিন বা ৩০ দিন হয়ে থাকে। ২৯ দিনের কমও নয় আবার ৩০ দিনের বেশীও নয়। দলীল : রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, اَلشَّهْرُ هكَذَا (وفى رواية وَخَنَسَ الْاِبْهَامَ فِى الثَّالِثَةِ) يعنى مَرَّةً تِسْعَةً وَعِشْرِيْنَ وَمَرَّةً ثَلاَثِيْنَ ـ “মাস এই দিনগুলোতে এবং এই দিনগুলোতে – অর্থাৎ কখনো ২৯ দিন আবার কখনো ৩০ দিন। (উভয় সংখ্যাটি তিনি আঙ্গুলের ইশারা দ্বারা বুঝালেন। ২৯ সংখ্যাটি বুঝানোর সময়) তিনি (স) তৃতীয় বার নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল বন্ধ করলেন। [সহীহ বুখারী – কিতাবুস সিয়াম باب قول النبى صلى الله عليه وسلم لا نكتب ولانحسب ، وباب قول النبى صلى الله عليه وسلم اذا رأيتم الهلال فصوموا ; সহীহ মুসলিম – কিতাবুস সিয়াম باب وجوب صوم رمضان لرؤية الهلال| শব্দগুলো সহীহুল বুখারীর। [তাফসীরে কুরআনে ‘আযীয ১/৬৫৬ পৃ:] মাসআলা – ২ : যদি ২৯ তারিখে মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে ৩০ দিন গণনা করবে। দলীল : রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, اَلشَّهْرُ تِسْعٌ وَعِشْرُوْنَ لَيْلَةً فَلاَ تَصُوْمُوْا حَتّى تَرَوْهُ فَاِنْ غُمَّ ্عَلَيْكُمْ فَاَكْمِلُوا الْعِدَّةَ ثَلثِيْنَ “মাস কখনো উনত্রিশ রাত্রিতেও হয়। সুতরাং তোমরা সিয়াম রাখবে না যে পর্যন্ত না চাঁদ দেখ। যদি চাঁদ তোমাদের থেকে মেঘের কারণে গোপন থাকে, তবে ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।”[সহীহ : সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাত (এমদা) ৪/১৮৭২ নং] মাসআলা – ৩ : যদি ২৯ তারিখে চাঁদ না দেখা যায়, সেক্ষেত্রে দু’-এক দিন পরে চাঁদ দেখে যেন এটা বলা না হয় – “এটাতো অমুক তারিখের চাঁদ।” বরং যে তারিখে চাঁদ দেখবে তাকে সেই তারিখেরই চাঁদ বলবে। অর্থাৎ চাঁদ বড়-ছোট হওয়া বিষয়টি ধর্তব্য নয়। দলীল : রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, اِنَّ اللهَ مُدَّه‘ لِلرُّؤْيَةِ فَهُوَ لِلَيْلَةٍ رَأَيْتُمُوْهُ “দেখার সুবিধার্তে আল্লাহ একে বর্ধিত করে দিয়েছেন। মূলত এ ঐ রাত্রের চাঁদ যে রাতে তোমরা দেখেছ।”[সহীহ মুসলিম – কিতাবুস সিয়াম باب بيان انه لا اعتبار بكبر الهلال وصغره] মাসআলা – ৪ : রমাযানের জন্য শা‘বানের চাঁদ দেখা ও তার তারিখ স্মরণ রাখার চেষ্টা করতে হবে। দলীল : রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, اَحْصُوْا حِلاَلَ شَعْبَانَ لِرَمَضَانَ “রমাযানের জন্য শা‘বানের তারিখের হিসাব রাখ।”[তিরমিযী – কিতাবুস সিয়াম باب ماجاء فى احصاء هلال شعبان| আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [সহীহ জামে‘উস সগীর ওয়া যিয়াদাতাহু লিলআলবানী ১/১৯৮ নং] মাসআলা – ৫ : স্থানীয়ভাবে চাঁদের দর্শক অনেক হলে একজন আদল সম্পন্ন (ন্যায় – নিষ্ঠাবান) মুসলিম ব্যক্তির সাক্ষ্য প্রয়োজন। অন্যদের জন্য এর সংবাদই যথেষ্ট। দলীল : ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রা) বলেন: تَرَاءَ النَّاسُ الْهِلاَلَ فَاَخْبَرْتُ رَسُوْلَ اللهِ – اِنِّىْ رَاَيْتُه‘ فَصَامَ وَاَمَرَ النَّاسَ بِصِيَامِه “একবার বহুলোক মিলে চাঁদ দেখতে ও দেখাতে লাগল। আমি রসূলুল্লাহ (স)এর কাছে সংবাদ দিলাম যে, আমি চাঁদ দেখেছি। তখন তিনি সাওম রাখলেন এবং লোকদেরকে সাওম রাখতে নির্দেশ দিলেন।”[আবূ দাউদ, দারেমী, মিশকাত (এমদা) ৪/১৮৮২ নং। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/২৩৪২]। সন্দেহের দিনে কেবল এককভাবে এক বেদুইনের সাক্ষের ভিত্তিতে রমাযানের সিয়াম পালনের নির্দেশ সম্বলিত হাদীসটি য‘য়ীফ [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/২৩৪০, ২৩৪১] মাসআলা – ৬ : স্থানীয়ভাবে স্বচ‡¶ চাঁদ দেখা না গেলে দু’ জন আদল সম্পন্ন (ন্যায়-নিষ্ঠাবান) মুসলিম ব্যক্তির সাক্ষ্য প্রয়োজন। অন্যদের জন্য এর সংবাদই যথেষ্ট। দলীল : حُسَيْنُ بِنُ الْحَارِسِ الْجَدَلِيِّ جَدِيْلَةَ قَيْسٍ اَنَّ اَمِيْرَ مَكَّةَ خَطَبَ ثُمَّ قَالَ عَهِدَ اِلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ – اَنْ نَّنْسُكَ لِلرُّؤْيَةِ فَاِنْ لَّمْ نَرَه‘ وَشَهِدَ شَاهِدَا عَدْلٍ نَسْكَنَابِشَهَادَتِهِمَا …. قال الحسين فقلت لشيخ الى جنبى من هذا الذى اوما اليه الامير قال هذا عبد الله بن عمر صدق كان اعلم بالله منه فقال بذلك امرنارسول الله – “হুসায়িন ইবনে আল-হারিস আল-জাদলী থেকে বর্ণিত, একবার মক্কার আমীর খুতবা প্রদানের সময় বললেন : রসূলুল্লাহ (স) আমাদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন, আমরা যেন চাঁদ দেখাকে ‘ইবাদত হিসাবে গুরুত্ব দেই। আর আমরা স্বচ‡¶ যদি তা না দেখি তবে দু’জন ন্যায়পরায়ন লোক এ ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করলে – তখন আমরা যেন তাদের সাক্ষের উপর নির্ভর করি।” …. হুসায়িন বলেন : আমি আমার পার্শ্ববর্তী একজন শায়েখকে জিজ্ঞাসা করি : এই ব্যক্তি কে – যাঁর প্রতি আমীর ইশারা করলেন? তিনি বলেন : ইনি ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘উমার (রা)। আর তিনি (রা) সত্য বলেন। তাঁর (আমীরের) চাইতে তিনি [ইবনে ‘উমার (রা)] আল্লাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী ছিলেন। যিনি (রা) বলেছেন : রসূলুল্লাহ (স) আমাদেরকে এরূপ করতে নির্দেশ প্রদান করেন।”[আবূ দাউদ – কিতাবুস সিয়াম باب شهادة رجلين على رؤية هلال شوال| আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/২২৩৮ নং] عَنْ رِبْعِىِّ بِّنْ حِرَاشٍ عَنْ رَجُلٍ مِنْ اَصْحَابِ النَّبِىِّ – قَالَ اخْتَلَفَ النَّاسُ فِىْ اخِرِ يَوْمٍ مِّنْ رَّمَضَانَ فَقَدِمَ اَعْرَابِيَّانِ فَشَهِدَا عِنْدَ النَّبِىِّ – بِاللهِ لاَهَلاَّ الْهِلاَلَاَمْسِ عَشِيَّةً فَاَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ – النَّاسَ اَنْ يُّفْطِرُوْا زاد فى حديثه وَاَنْ يَّغْدُوْا اِلَى مُصَلاَّهُمْ “রিব‘য়ী ইবনে হিরাশ নবী (স)এর জনৈক সাহাবী হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন: একবার লোকেরা রমাযানের শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখা সম্পর্কে মতভেদ করেন। তখন দু’জন বেদুঈন নবী (স)এর নিকট উপস্থিত হয়ে আল্লাহর শপথ করে সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, গত সন্ধ্যায় তারা শাওয়ালে চাঁদ দেখেছে। রসূলুল্লাহ (স) লোকদেরকে রোযা ভাঙ্গার নির্দেশ দেন। বর্ণনাকারী তাঁর হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তিনি (স) আরও নির্দেশ দিয়েছিলেন : “আর তারা যেন আগামী কাল ‘ঈদের সালাত আদায়ের জন্য ‘ঈদগাহে গমন করে।”[আবূ দাউদ – কিতাবুস সিয়াম باب شهادة رجلين على رؤية هلال شوال| আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/২২৩৯ নং] লক্ষ্যণীয় এ চাঁদ দর্শনটি স্থানীয়ভাবে ছিল না। বরং দূরবর্তী স্থানের ছিল। মাসআলা – ৭ : রমাযানের চাঁদের ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ। দলীল : عن ابن عمر قال : تراءى الناس الهلال فرأيته فأخبرت رسول الله صلى الله عليه وسلم فصام وأمر الناس بصيامه ইবনে উমার (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : একবার লোকেরা চাঁদ অন্বেষণ করে, কিন্তু দেখতে পায়নি। পরে এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (স)-কে খবর দেয় যে, সে চাঁদ দেখেছে। এরপর তিনি সিয়াম রাখেন এবং লোকদেরকেও সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন।[ আবূ দাউদ – কিতাবুস সিয়াম باب فيى شهادة الواحد على رؤية هلال رمضان ; আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/২৩৪২]। শুআয়েব আরনাউত তাঁর সহীহ ইবনে হিব্বানের তাহক্বীক্বেও হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [তাহক্বীক্বকৃত সহীহ ইবনে হিব্বান ৮/৩৪৪৭ নং] মাসআলা – ৮ : যখন চাঁদ দেখবে তখন নিচের দু‘আটি পড়বে। দলীল : اَللَّهُمَّ اَهِلَّه‘ عَلَيْنَا بِالْاَمْنِ وَالْاِيْمَانِ وَالسَّلاَمَةِ وَالْاِسْلاَمِ رَبِّىْ وَرَبِّكَ اللهُ “হে আল্লাহ! এই নতুন চাঁদকে উদয় কর আমাদের জন্যে নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে। আল্লাহ আমাদের এবং তোমার (চাঁদের) রব।”[তরমিযী, দারেমী। হাদীসটি সহীহ। অবশ্য প্রথমে ‘আল্লাহু আকবার’ শব্দে বর্ণিত উক্ত হাদীসের বর্ধিত বর্ণনাটিকে অনেকে য‘য়ীফ বলেছেন [তাহক্বীক্বকৃত দারেমী (মিশর) ১/৪৪৫ পৃ:, তাহক্বীক্ব : সাইয়েদ ইবরাহীম ও ‘আলী মুহাম্মাদ ‘আলী]। মিশকাত (এমদা) ৫/২৩১৬ নং] মাসআলা – ৯ : নিজ এলাকায় চাঁদ দেখা না গেলেও অন্য এলাকার চাঁদ দর্শনের সত্যতা প্রমাণিত হলে তার উপর ‘আমল করতে হবে। عَنْ أَبِى عُمَيْرِ بِنْ أَنَسٍ عَنْ عُمُوْمَةٍ لَه‘ مِنَ الصَّحَابَةِ اَنَّ رَكْبًا (وفى رواية فَجَاءَ رَكِبٌ مِنْ آخِرِ النَّهَارِ) فَشَهِدُوْا أَنَّهُمْ رَأَوُا الْهِلاَلَ بِالْأَمْسِ فَاَمَرَهُمُالنَّبِىُّ – أَنْ يُّفْطِرُوْا ، وَإِذَا أَصْبَحُوْا أَنْ يَّغْدُوْا إِلَى مَصَلاَّهُمْ “আবূ ‘উমাইর বিন আনাস (রা) তাঁর চাচাদের [সাহাবীদের (রা)] নিকট থেকে বর্ণনা করেন, একটি কাফেলা (অন্য বর্ণনায়, দিনের শেষভাগে) এসে সাক্ষ্য দিল যে, গতকাল সন্ধ্যায় তারা আকাশে চাঁদ দেখেছে। ফলে নবী (স) তাদেরকে সিয়াম ভঙ্গ (ইফতার) করতে বললেন এবং পরদিন সকালে ‘ঈদের ময়দানে যেতে নির্দেশ দিলেন।”[আহমাদ, আবূ দাউদ, বুলূগুল মারাম; এর সনদ সহীহ (অনুবাদ : খলিলুর রহমান বিন ফজলুর রহমান) হা/৪৭৪। আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন [তাহক্বীক্বকৃত আবূ দাউদ হা/১১৫৭]। ইবনে মাজাহতে (হা/১৬৫৩) বর্ণিত হয়েছে : فَجَاءَ رَكِبٌ مِنْ آخِرِ النَّهَارِ “একটি কাফেলা দিনের শেষভাগে আসল।” ‘হাদীসটি সহীহ’। [তাহক্বীক্বকৃত ইবনে মাজাহ পৃ: ২৯০] সুস্পষ্ট হল, হাদীসে বর্ণিত কাফেলাটি নবী (স)এর নিজস্ব এলাকার ছিল না। কেননা, নিজ এলাকায় চাঁদ দেখা না যাওয়ায় নবী (স) ও সাহাবাগণ সিয়াম রেখেছিলেন। সুস্পষ্ট হল, নিজ এলাকায় চাঁদ না দেখা গেলে অন্য এলাকার চাঁদ দেখার খবর পৌঁছালেও ঐ চাঁদ অনুযায়ী সিয়াম, ‘ঈদ, হজ্জ প্রভৃতির বিধান কার্যকরী করা যাবে। এ পর্যায়ে দুরত্বের বিষয়টি কোন দলীল দ্বারাই সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। ইমাম শওকানী (রহ) এই দূরত্ব সম্পর্কে বলেছেন : وسواء كان بين القطرين من العبد ما يجوز معه اختلاف المطالع أم لا فلا بقبل التخصيص إلا بدليل “যদিও দু’টি শহরের মধ্যে এত দুরত্ব থাকে যার ফলে ওদের চাঁদের উদয়স্থলে অনেক পার্থক্য বিদ্যমান। অতএব এক জায়গার চাঁদ দেখার খবর কিছু এলাকা পর্যন্ত নির্দিষ্টকরণ ততক্ষণ চলবে না যতক্ষণ ওর প্রমাণে কোন দলীল পেশ না করা যাবে।” [নায়লুল আওতার (মিশর) ৪/৫৫৯ পৃ:] মাসআলা – ৯ : সিয়াম হল যেদিন মুসলিমদের মধ্যে সিয়াম পালন করা হয়। ঈদুল ফিতর হল যেদিন মুসলিমদের মধ্যে ইফতার করা হয়। আর ঈদুল আযহা হল যেদিন মুসলিমদের মধ্যে কুরবানী করা হয়। আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী (স) বলেছেন : اَلصَّوْمُ يَوْمَ تَصُوْمُوْنَ، وَالْفِطْرُ يَوْمَ تَفْطَرُوْنَ، وَالْأَضْحَى يَوْمَ تُضْحُّوْنَ “সিয়াম হল যেদিন তোমরা সিয়াম পালন কর। ঈদুল ফিতর হল যেদিন তোমরা ইফতার কর। আর ঈদুল আযহা হল যেদিন তোমরা কুরবানী কর।”[তিরমিযী – কিতাবুস সিয়াম باب ما جاء الصوم يوم تصومو … ; আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। [তাহক্বীক্বকৃত তিরমিযী (রিয়াদ) হা/৬৯৭] ইমাম তিরমিযী (রহ) হাদীসটি উল্লেখ করার পর লিখেছেন : هذا حديث غريب حسن وفسر بعض أهل العلم هذا الحديث فقال: إنما معنى هذا، الصوم والفطر مع الجماعة وعظم الناس “হাদীসটি হাসান-গরীব। কোন কোন আলেম এই হাদীসটির ব্যাখ্যায় বলেন : এর মর্ম হল, সিয়াম ভঙ্গ ও তা আদায়ে মুসলিম জামাআত ও অধিকাংশ লোকদের সাথে পালন করতে হবে।” عن مسروق قال دخلت على عائشة يوم عرفة فقالت اسقوا مسروقا سويقا و أكثروا حلواه قال فقلت إني لم يمنعني أن أصوم اليوم إلا أني خفت أن يكون يوم النحر , فقالت عائشة : النحر يوم ينحر الناس , و الفطر يوم يفطر الناس মাশরুক (রহ) বর্ণনা করেন : আমি আরাফার দিন বিবি আয়েশার কাছে গেলাম। তিনি বললেন : মাশরুক ছাতু বানিয়ে বন্টন কর এবং তাতে বেশী মিষ্টি দিও। মাশরুক বললেন : আজকে এই জন্যে রোযা রাখি নাই যদিবা কোথাও কুরবানীর দিন হয়। বিবি আয়েশা (রা) বললেন : কুরবানীর দিন সেটাই যাতে সব লোকেরা কুরবানী করে আর ঈদুল ফিতর দিন সেটাই যেদিন সব লোকেরা ইফতার করে।”[সুনানে বায়হাক্বী, হা/৭৯৯৮। আলবানী হাদীসটিকে জাইয়েদ (সহীহ ও হাসানের মাঝামাঝি) বলেছেন [আসসহীহাহ ১/২২৪ নং] এ থেকে সুস্পষ্ট হল যে, যখন কোন মুসলিম অঞ্চলে মুসলিমগণ সুনিশ্চিত ভাবে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সিয়াম বা ঈদ পালন করে, তাহলে পৃথিবীতে যে মুসলিমের কাছেই এই খবর পৌঁছে তার জন্য মুসলিম জামা‘আতের সাথে সিয়াম বা ঈদ পালন করা ওয়াজিব। ইমাম সুনআনী তাঁর ‘সুবূলুস সালাম’ (২/৭২)-এ লিখেছেন : “ فيه دليل على أنه يعتبر في ثبوت العيد الموافقة للناس , و أن المتفرد بمعرفة يوم العيد بالرؤية يجب عليه موافقة غيره , و يلزمه حكمهم في الصلاة و الإفطار و الأضحية “ “এ থেকে দলিল পাওয়া গেল যে, চাঁদের প্রমাণ পাওয়া গেলে তা সমস্ত মানুষের জন্য প্রযোজ্য। যদি একক ভাবে কোথাও ঈদের চাঁদ দেখা যায় তাহলে অন্য স্থানের জন্যও তা প্রযোজ্য। আর এই হুকুম তাদের প্রতি ঈদের সালাত, ইফতার ও কুরবানীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।” উক্ত উদ্ধৃতির পর মুহাদ্দিস নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ) বলেছেন : و ذكر معنى هذا ابن القيم رحمه الله في ” تهذيب السنن ” ( 3 / 214 ) “ইবনে ক্বাইয়েম (রহ) তাঁর “তাহযীবুস সুনানে”-ও অনুরূপ বলেছেন।”[আলবানী’র, আস-সহীহাহ ১/২২৪ নং হাদীসের আলোচনা দ্রষ্টব্য] নবাব সিদ্দীক হাসান খান (রহ) তাঁর ‘রওযাতুন নাদিয়া’ (১/৩৩১) – গ্রন্থে ইমাম শওকানী (রহ)- উক্ত বক্তব্যের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তাছাড়া বর্তমান যামানার মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ)-ও তাঁর ‘তামামুল মিন্নাহ’ (৩৯৭ পৃ:) কিতাবটিতে এই মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। সংশয় ১ : এ পর্যায়ে সহীহ মুসলিমের তরজমাতুল বাব (অনুচ্ছেদ) অনেককে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। যেখানে বলা হয়েছে: بَابُ بَيَانِ اَنَّ لِكُلِّ بَلَدٍ رُؤْيَتِهِمْ وَاَنَّهُمْ اِذَا رَاَوُ الْهِلاَلَ بِبِلَدٍ لاَيَثْبُتُ حُكْمُهُ لِمَا بَعْدُ عَنْهُمْ [بلد [শহর,নগর,ভূখন্ড,দেশ= “প্রত্যেক দেশের শহরের অধিবাসীদের জন্য তাদের চাঁদ দেখা তাদের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য, অন্য শহরের মানুষের জন্য নয়। সুতরাং কোন শহরের লোক যদি চাঁদ দেখে তবে এ হুকুম তাদের থেকে দূরবর্তী শহরের লোকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।”[সহীহ মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম] সমাধান : শায়খুল হাদীস আল্লামা ওবায়দুল্লাহ রহমানী সাহেব বলেন : “এটা রসূলুল্লাহ (স)এর মারফু‘ হাদীস নয় এবং কোন সাহাবীরও উক্তি নয়। বরং এটা কোন ফক্বীহ্‌র ব্যক্তিগত উক্তি। সেজন্য এই আইনটি (বিধানটি) হাদীসের মোকাবেলায় গ্রহণযোগ্য হবে না।”[ওবায়দুল্লাহ রহমানী, রমাযানুল মুবারক কে ফাযায়েল ওয়া আহকাম (বেনারস : সালাফিয়্যাহ ছাপা) পৃ: ৯ ; সূত্রে : শায়েখ আইনুল বারী, সিয়াম ও রমাযান (কলিকাতা, ১৯৯২ ‘ঈসায়ী) পৃ: ২৬] কেননা উক্তিটি পূর্বে বর্ণিত সহীহ হাদীসটির বিরোধী। যেখানে সুস্পষ্ট হয়েছে, নবী (স) দিনের শেষ ভাগে নিজ শহর ব্যতীত অনেক দূর থেকে আসা কাফেলার চাঁদ দেখার সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন এবং তার উপর ‘আমল করার হুকুমও দিয়েছেন। তাছাড়া দ্রুতগামী যানবাহনের উত্তরোত্তর উন্নতির সাথে সাথে দূরত্বের শর্তটি ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকবে। সম্ভবত এ কারণে, নবী (স)এর কোন হাদীসেই দূরত্বের বিষয়টি প্রাধান্য পায় নি – আল্লাহই সর্বজ্ঞ। নবী (স)এর কাছে কাফেলাটির সংবাদ না পৌঁছালে তিনি কি করতেন? সংগত কারণেই, রমাযানের ৩০ দিন পূর্ণ করতেন। কাজেই এখানে বিশ্বস্ত সূত্রে সংবাদ পৌঁছানোটাই শর্ত হল। এবং কখনই দূরত্বকে শর্ত হিসাবে নির্ধারণ করা যায় না। এ কারণে ইমাম শওকানীর (রহ) বক্তব্যটিই যথার্থ। সংশয় ২ : সহীহ মুসলিমের নিম্নোক্ত বর্ণনাটিও অনেকে অঞ্চল ভিত্তিক চন্দ্র দিন-তারিখ নির্ধারণের স্বপক্ষে উপস্থাপন করেন। বর্ণনাটি নিম্নরূপ : কুরায়ব (রহ) থেকে বর্ণিত, উম্মুল ফযল বিনতে হারিস তাকে সিরিয়ায় মু‘আবিয়া (রা)এর কাছে পাঠালেন। (কুরায়ব বলেন,) আমি সিরিয়ায় পৌঁছলাম এবং প্রয়োজনীয় কাজ সমাধা করলাম। আমি সিরিয়া থাকাবস্থায়ই রমাযানের চাঁদ দেখা গেল। জুম‘আর দিন সন্ধ্যায় আমি চাঁদ দেখলাম। এরপর রমাযানের শেষ ভাগে আমি মদীনায় ফিরলাম। ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) আমার নিকট জিজ্ঞাসা করলেন এবং চাঁদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন দিন চাঁদ দেখেছ? আমি বললাম, আমরা তো জুম‘আর দিন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছি। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি নিজে দেখেছ কি? আমি বললাম, হাঁ, আমি দেখেছি এবং লোকেরাও দেখেছে। তারা সিয়াম পালন করেছে এবং মু‘আবিয়া (রা)ও সিয়াম পালন করেছেন। তিনি বললেন, আমরা কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখেছি। আমরা সিয়াম পালন করতে থাকব, শেষ পর্যন্ত ত্রিশ দিন পূর্ণ করব অথবা চাঁদ দেখব। আমি বললাম, মু‘আবিয়া (রা)এর চাঁদ দেখা এবং তার সাওম পালন করা আপনার জন্য যথেষ্ট নয় কি? তিনি (রা) বললেন : لاَ هكَذَا اَمَرَنَا رَسُوْلُ اللهِ – وَشَكَّ يَحْيَ بِنْ يَحْيَ فِىْ نَكْتَفِىْ اَوْ تَكْتَفِىْ “না যথেষ্ট নয়। কেননা রসূলুল্লাহ (স) আমাদেরকে এরূপ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।” [সহীহ মুসলিম, কিতাবুস সিয়াম, باب بيان ان لكل بلد رؤيتهم وانهم اذا راو الهلال ….] সমাধান : ইমাম শওকানী (রহ) ইবনে ‘আব্বাসের শেষোক্ত উক্তির ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেন : “এর দাবী হল যেভাবে তিনি(পূর্বে) বলেছেন : فَلاَ نَزَالُ نَصُوْمُ حَتّى نُكْمِلَ ثَلاَثِيْنَ اَوْ نَرَاهُ “আমরা সিয়াম পালন করতে থাকব, শেষ পর্যন্ত ত্রিশ দিন পূর্ণ করবঅথবা চাঁদ দেখব।” এ মর্মে নবী (স)এর নির্দেশ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে উল্লেখ করা হয়েছে : لا تصوموا حتى تروا الهلال ، ولا تفطروا حتى تروه فإن غم عليكم فأكملوا العدة ثلاثين “সিয়াম রাখবে না যতক্ষণ না চাঁদ দেখ। এভাবে রোযা খুলবে নাযতক্ষণ না (শাওয়ালের) চাঁদ দেখ। আর যদি চাঁদ তোমাদের উপর গোপন থাকে, তাহলে তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে।” প্রত্যেক দিকের অধিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্রভাবে উক্ত হুকমটি সুনির্দিষ্ট (খাস) নয় (وهذا لا يختص بأهل ناحية على جهة الانفراد), বরং উক্ত সম্বোধনটি সমস্ত মুসলিমদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য (بل هو خطاب لكل من يصلح له من المسلمين)| সুতরাং এ দলীলটিরমাধ্যমে কোন ভূখন্ডের চাঁদ দেখার আবশ্যকতা অন্য ভুখন্ডের চাঁদ দেখার প্রমাণ পাওয়ার সাপেক্ষে আর আবশ্যক থাকে না(فالاستدلال به على لزوم ورية أهل بلد لغيرهم من أهل البلاد أظهر من الاستدلال به على عدم لزوم)| কেননা কোন ভূখন্ডের চাঁদ দেখাটাইযেন সমস্ত মুসলিমের দেখা, যা অন্যদের পক্ষ থেকে আবশ্যকীয় বিষয়ের দায়িত্ব পালন। আর ইবনে ‘আব্বাস (রা)এরবক্তব্যে যে দিকে ইশারা করা হয়েছে, তাতে এক ভূখন্ডের চাঁদ দেখাকে অন্য ভূখন্ডের জন্য আবশ্যক করা হয় নি। কিন্তুআবশ্যক না হওয়ার নির্দিষ্টতা (পূর্বোক্ত হাদীসের আলোকে) ‘আক্বলী দলীলের বিরোধী। যদি দু’টি অঞ্চলের মধ্যে চাঁদেরউদয়স্থলে অনেক পার্থক্যও থাকে তবুও তাদের পরস্পরের জন্য চাঁদের দর্শনের খবর গ্রহণযোগ্য। সিরিয়ার চাঁদ দেখাকেমদীনায় ইবনে ‘আব্বাসের (রা) মেনে না নেওয়াটা তাঁর ইজতিহাদ (নিজস্ব গবেষণালব্ধ সিদ্ধান্ত), যা দলীলযোগ্য হতে পারে না।”[ইমাম শওকানী (রহ) , নায়লুল আওতার (মিশর) – কিতাবুস সিয়াম باب الهلال إذا رآه أهل بلدة هل يلزم بقية البلاد الصوم ৪/৫৫৯ পৃ: হা/১৬৩৬] ‘বালাদ’ শব্দটির অর্থ নিরূপন : বলা হয় – যে সমস্ত মুহাদ্দিস নিজেদের হাদীস সঙ্কলনে ইবনে আব্বাস (রা)-এর বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন তারা এই মর্মে বাব বা অনুচ্ছেদ লিখেছেন যে, “প্রত্যেক বালাদের জন্য নিজ নিজ চাঁদ প্রযোজ্য” – যেভাবে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, মুহাদ্দিসগণ আলোচ্য হাদীসের এই অর্থই নিয়েছেন। এর জবাব হল, নিঃসন্দেহে মুহাদ্দিসগণ ইবনে আব্বাস (রা)-এর হাদীস অনুযায়ী যে অনুচ্ছেদ লিখেছেন তার দাবী এটাই। কেননা উক্ত হাদীসে ইবনে আব্বাস (রা) সেদিকেই ইশারা করেছেন। তাছাড়া তিনি (রা) صُوْمُوْا لِرُؤْيَتِه وَافْطِرُوْا لِرُؤْيَتِهِ “চাঁদ দেখে সিয়াম রাখ এবং চাঁদ দেখে সিয়াম খোল” [সহীহ: সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাত (ঢাকা : এমদাদিয়া) ৪/১৮৭৩ নং] – হাদীসটি থেকে উক্ত মর্ম নিয়েছেন। কিন্তু পর্যালোচনার বিষয় হল, ইবনে আব্বাস (রা) ঐ হাদীসের যে মর্ম নিয়েছেন তা সহীহ কি না? তাছাড়া মুহাদ্দিসগণ তাঁদের হাদীস সঙ্কলনে যে অনুচ্ছেদ লিখেছে : لكل بلد رؤتهم “প্রত্যেক বালাদের জন্য নিজের চাঁদ প্রযোজ্য” – এখানে বালাদের উদ্দেশ্যই বা কি? আরবি ভাষায় বালাদ শব্দটি কখনো দেশ, আবার কখনো এর অন্তর্ভূক্ত শহরের অর্থ নেয়া হয়। যদি হাদীসটিতে ব্যবহৃত বালাদ শব্দটি একটি দেশ অর্থ নেয়া হয় তবে তা সঠিক হবে না। কেননা হাদীসটিতে সুস্পষ্ট যে, ইবনে আব্বাস (রা) বালাদ শব্দ দ্বারা একই রাষ্ট্র অর্থ নেন নাই। কেননা এটা তখনকার ঘটনা যখন সমগ্র মুসলিম বিশ্ব মুআবিয়া (রা)এর হুকমাতের অধীন ছিল। সে সময় উম্মাতে মুসলিমার খলীফা তিনিই ছিলেন। এরপরও ইবনে আব্বাস (রা) মুআবিয়া ও মুসলিমদের দারুল খেলাফতের চাঁদ দর্শনকে মেনে নেন নি। এ থেকে বুঝা যায় যে, ইবনে আব্বাস (রা) একই মুসলিম রাষ্ট্রের অধীনে প্রত্যেক শহরের স্বতন্ত্র চাঁদ দেখার অর্থ নিয়েছেন, যদিওবা তাদের চাঁদের মাতলা (উদয়স্থল) একই হোক না কেন। তাছাড়া সিরিয়া ও মদীনার মাতলা ভিন্ন হওয়ার কোন দলীল নেই। কেননা সিরিয়ার দামেস্ক শহরটি মদীনা থেকে উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত, বরাবর পশ্চিম দিকে নয়। এ কারণে দামেস্কের যে চাঁদ ছিল তা মদীনার আকাশের প্রান্তেও ছিল। মদীনাতে চাঁদ দেখা না যাওয়াটা স্বতন্ত্র¿ মাতলা হওয়ার প্রমাণ হয় না। বরং এক্ষেত্রে অন্য কোন কারণ ছিল। অর্থাৎ সে সময় অবশ্যই মদীনার আকাশে চাঁদ ছিল কিন্তু হয়তো মাতলা পরিষ্কার না থাকায় চাঁদ দেখা যায় নি। সুতরাং আলোচ্য হাদীসে ইবনে আব্বাস (রা)-এর উক্তির সুস্পষ্ট দাবী হল, প্রতিটি দেশের প্রতিটি শহরের নিজ নিজ চাঁদ দর্শন করতে হবে, যদিও তাদের মাতলা একই হয়। তথা এক শহরের চাঁদ অপর শহরের জন্য প্রযোজ্য নয়। সুতরাং হাদীসটিকে একক মাতলা বা ভিন্ন ভিন্ন মাতলার দলীল হিসাবে পেশ করা যায় না বরং এটা ইবনে আব্বাস (রা)-এর উত্তির অপব্যাখ্যাও বটে। সমন্বয় সাধন : ইবনে ‘আব্বাস (রা)এর হাদীসটি সেসব অঞ্চলের জন্য আজও প্রযোজ্য হবে যেখানে পৃথিবীর প্রথম চাঁদ দর্শনের খবর পৌঁছে না। এ পর্যায়ে শাওয়াল বা ‘ঈদের চাঁদ দর্শনের ক্ষেত্রেও তারা ইবনে ‘আব্বাস (রা)এর ‘আমল অনুযায়ী নিজ এলাকার চাঁদ দর্শনপূর্বক ‘ঈদ বা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে। এমনকি রমাযান শুরু হওয়ার বেশ কিছু দিন পরে যদি তারা নিজেদের এলাকার পূর্বে চাঁদ উঠার খবর পায়, সেক্ষেত্রেও ইবনে ‘আব্বাস (রা)এর ইজতিহাদের উপর ‘আমল করতে পারবে [যা তিনি (রা) নবী (স)এর হাদীসের মর্ম হিসাবে পালন করেছিলেন]। পক্ষান্তরে যেসব অঞ্চলে পৃথিবীর প্রথম চাঁদ দর্শনের খবর বিশ্বস্ত সূত্রে পৌঁছে যাবে তারা কাফেলার হাদীসটির অনুসরণ করবে। যদিও সেটা তাদের নিজ এলাকা নয় বরং দূরবর্তী এলাকা। এপর্যায়ে উভয় হাদীসের দাবীর উপর ‘আমল করা যাবে। যা একটি উত্তম সমন্বয়| ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ (রহ) এর সমন্বয়টি করেছেন।এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন “ইসলামে নতুন চাঁদের বিধান ও এ সম্পর্কীত বিতর্ক নিরসন” মূল : আতাউল্লাহ ডায়রাভী, অনুবাদ : কামাল আহমাদ] কুরআন ও সহীহ হাদীস মতবিরোধপূর্ণ ও পরস্পর বিরোধী নয় আল্লাহ তা‘আলা বলেন: اَفَلاَ يَتَدَبَّرُوْنَ الْقُرْانَ ط وَلَوْ كَانَ مِنْ عِنْدَ غَيْرِ اللهِ لَوَجَدُوْا فِيْه اخْتِلاَفًا كَثِيْرًا “তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না? এটা যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে নাযিল হত, তাহলে অবশ্যই এতে বৈপরীত্য (ইখতিলাফ) দেখতে পেত।” [সূরা নিসা : ৮২ আয়াত] আল্লাহ তা‘আলা নবী (আ)দের আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন: وَاَنْزَلَ مَعَهُمُ الْكِتبَ بِالْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ فِيْمَا اخْتَلَفُوْا فِيْه “আর তাদের (নবীদের) সাথে হক্বসহ কিতাব নাযিল করেছি, যেন মানুষের মধ্যকার ইখতিলাফ (মতপার্থক্য)গুলো নিরসন হয়।” [সূরা বাক্বারাহ : ২১৩ আয়াত] এ সম্পর্কে নবী (স) বলেছেন : لاَ تَخْتَلِفُوْا فَاِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمُ اخْتَلَفُوْا فَهَلَكُوْا “ইখতিলাফ করো না। কেননা তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা ইখতিলাফ করত। এ কারণে তারা ধ্বংস হয়ে গেছে।” [বুখারী, কিতাবুল আহাদিসুল আম্বিয়া] অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে : اِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِاِخْتِلاَفِهِمْ فِي الْكِتَابِ “তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা (আল্লাহর) কিতাবে ইখতিলাফ করেছিল। এ কারণে তারা ধ্বংস হয়েছিল।” [মুসলিম, কিতাবুল ইলম] কুরআন ও সুন্নাহর মতবিরোধ নিরসনে নবী (স) বলেছেন : سَمِعَ النَّبِيُّ- قَوْمًا يَّتَدَارَؤُنَ فِي الْقُرْانِ فَقَالَ اِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِهذَا ضَرَبُوْا كِتَابَ اللهِ بَعْضَه‘ بِبَعْضٍ وَّ انَّمَا نَزَلَ كِتَابُ اللهِ يُصَدِّقُ بَعْضُه‘ بَعْضًا فَلاَ تُكَذِّبُوْا بَعْضَه‘ بِبَعْضٍ فَمَا عَلِمْتُمْ مِّنْهُ فَقُوْلُوْا وَمَا جَهِلْتُمْ فَكِلُوْهُ اِلي عَالِمِه “নবী (স) একদল লোককে কুরআনের বিষয়ে বিতর্ক করতে শুনলেন। তখন তিনি (স) বললেন : তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তারা এ কারণেই হালাক (ধ্বংস) হয়েছে। তারা আল্লাহর কিতাবের এক অংশকে অপর অংশ দ্বারা বাতিল করার চেষ্টা করেছিল। অথচ কিতাবুল্লাহ নাযিল হয়েছে এর এক অংশ অপর অংশের সমর্থক হিসাবে। সুতরাং তোমরা এর এক অংশকে অপর অংশ দ্বারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে না। বরং যা তোমরা জান কেবল তা-ই বলবে। আর যা জান না তা যে জানে তার কাছে সপর্দ করবে।”[আহমাদ, মিশকাত [ঢাকা : এমদাদিয়া লাইব্রেরী] ২য় খন্ড হা/২২১। আলবানী হাদীসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন – আলবানীর তাহক্বীক্বকৃত মিশকাত ১/২৩৮ পৃ] সুতরাং চাঁদ সম্পর্কীত উল্লিখিত কুরআন ও হাদীসের মধ্যকার সঠিক সমাধানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন এবং উম্মাহর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাপারে মুসলিমদের ঐক্যকে ত্বরান্বিত করুন। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের নেক নিয়্যাত ও কাজ গুলো ক্ববুল কর, আমিন!!
    • আল্লাহ্‌তায়ালা আমাদেরকে এইসব ফিতনা থেকে রক্ষা করুন। আমীন!

      উপরোক্ত বাংলা কমেন্টের লেখাটি “ইসলামে নতুন চাঁদের বিধান ও এ সম্পর্কীত বিতর্ক নিরসন” বইটির অনুবাদক জনাব কামাল আহমাদের নিজের লেখা হিসেবেই অন্য একটি ওয়েবসাইটে ২০১০ সালে পোস্ট করা হয়েছিলো, (সে লেখাটির লিঙ্ক নিচে দেয়া হল) যদিও এখানে সেটাই বেনামে কমেন্টের স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে।

      http://www.unifiedmoonsight.com/2010/06/09/কুরআন-ও-হাদীসের-আলোকে-চাঁ/

      লেখাটির শেষ দিকে সহীহ মুসলিমে কুয়ারব (রহঃ) বর্ণিত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদীসটির উল্লেখের পরে কোন আলেমের সুত্র ছাড়া অনুবাদক কামাল আহমাদ নিজেই মন্তব্য করে বলেছেন যে-

      (কিন্তু পর্যালোচনার বিষয় হল, ইবনে আব্বাস (রা) ঐ হাদীসের যে মর্ম নিয়েছেন তা সহীহ কি না?)

      অর্থাৎ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশিষ্ট এবং সম্মানিত সাহাবী ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথার সঠিক মর্ম বুঝতে পেরেছেন কিনা সে বিষয়ে অনুবাদক কামাল আহমাদ তাঁর ওই প্রশ্নের মাধ্যমে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আর এর মাধ্যমে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে- সাহাবী এবং মুহাদ্দিসগণ চাঁদের বিঁধানের সঠিক মর্ম না বুঝলেও ১,৪০০শত বছর পরে অনুবাদক কামাল আহমাদ ঠিকই এর সঠিক মর্ম বুঝতে পেরেছেন। না-আউযুবিল্লাহ!

      অনুবাদক ‘কামাল আহমাদ এবং তাঁর অন্ধ অনুসারীগণ’ সম্মানিত সাহাবীদের সমালোচনা করতে যেয়ে নিজেরাই এমন বিতর্কিত ও সমালোচিত হয়েছে যে- তাঁদেরকে এখন নিজেদের পরিচয় গোপন করে ‘stranger’ হিসেবে লেখা পোস্ট করতে হচ্ছে।

      আল্লাহ্‌তায়ালা আমাদেরকে এইসব অনালেম ব্যক্তিদের দ্বারা ইসলামের বিঁধানের বিকৃত ব্যাখ্যার ফিতনার হাত থেকে রক্ষা করুন। আমীন!

      • ইবনে আব্বাস (রা) মাসে শেষে খবরটি পেয়েছিলেন। তাই সহীহ মুসলিমের হাদীসটি মাসের শেষে খবর পাওয়ার সাথে সম্পৃক্ত। যদি পালনযোগ্য সময়ের মধ্যে খবরটি পাওয়া যায় তাহলে ইবনে আব্বাসের (রা) হাদীসটি সাথে কোন সংঘর্ষ হয় না।

        কারো নাম থাকুক বা না থাকুক, দলিল প্রমাণ থাকলে যেই লিখুক না কেন তাতে কোন সমস্যা দেখি না।

আপনার মতামত বা প্রশ্ন লিখুন।

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s