Download article as Word Download article as PDF
ফতোওয়া সিয়াম: রোযা সম্পর্কে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৫৬টি প্রশ্নোত্তর
(ফতোয়া আরকানুল ইসলাম থেকে)
মূল: আল্লামা মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উছাইমীন (রাহ:)
অনুবাদক: শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী
যাকাত বিষয়ক ৩৭টি প্রশ্নোত্তর পড়ুন এখান থেকে
প্রশ্নঃ (৩৯২) ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি?
উত্তরঃ পবিত্র কুরআনের নিম্ন লিখিত আয়াত পাঠ করলেই আমরা জানতে পারি ছিয়াম ফরয হওয়ার হিকমত কি? আর তা হচ্ছে তাক্বওয়া বা আল্লাহ্ ভীতি অর্জন করা ও আল্লাহ্র ইবাদত করা। আল্লাহ্ বলেন,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمْ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা তাক্বওয়া অর্জন করতে পার।(সূরা বাক্বারাঃ ১৮৩) তাক্বওয়া হচ্ছে হারাম কাজ পরিত্যাগ করা। ব্যাপক অর্থে তাক্বওয়া হচ্ছে, আল্লাহ্র নির্দেশিত বিষয় বাস্তবায়ন করা, তাঁর নিষেধ থেকে দূরে থাকা। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالْعَمَلَ بِهِ والْجَهْلَ فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ
যে ব্যক্তি (রোযা রেখে) মিথ্যা কথা, মিথ্যার কারবার ও মূর্খতা পরিত্যাগ করল না, তার খানা-পিনা পরিহার করার মাঝে আল্লাহর কোন দরকার নেই।[1]
অতএব এ কথা নিশ্চিত হয়ে গেল যে, রোযাদার যাবতীয় ওয়াজিব বিষয় বাস্তবায়ন করবে এবং সবধরণের হারাম থেকে দূরে থাকবে। মানুষের গীবত করবে না, মিথ্যা বলবে না, চুগলখোরী করবে না, হারাম বেচা-কেনা করবে না, ধোঁকাবাজী করবে না। মোটকথা চরিত্র ধ্বংসকারী অন্যায় ও অশ্লীলতা বলতে যা বুঝায় সকল প্রকার হারাম থেকে বিরত থাকবে। আর একমাস এভাবে চলতে পারলে বছরের অবশিষ্ট সময় সঠিক পথে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ্।
কিন্তু আফসোসের বিষয় অধিকাংশ রোযাদার রামাযানের সাথে অন্য মাসের কোন পার্থক্য করে না। অভ্যাস অনুযায়ী ফরয কাজে উদাসীনতা প্রদর্শন করে, হালাল-হারামে কোন পার্থক্য নেই। তাকে দেখলে বুঝা যাবে না তার মধ্যে ছিয়ামের মর্যাদার কোন মূল্য আছে। অবশ্য এ সমস্ত বিষয় ছিয়ামকে ভঙ্গ করে দিবে না। কিন্তু নিঃসন্দেহে তার ছওয়াব বিনষ্ট করে দিবে।
পরবর্তি পৃষ্ঠায় যেতে নিচের পৃষ্ঠা নাম্বারে ক্লিক করুন।
ইমাম ইবনু তায়মিয়া (রহঃ) এবং আর ও অন্যান্য সাহাবী গন যদি বর্তমানে উপস্থিত থাকতেন তাহলে নিশ্চয়ই তাদের মতামত ভিন্নতর হতো। কারণ সে যুগে কোন একটা সংবাদ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে এক দিনে পৌছানো যায় এমন কোন যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম বা প্রযুক্তি, ঐ সময়কার মানুষেরা মহান অল্লাহ্ তাআলার জ্ঞান ভান্ডার থেকে আবিষ্কার করতে পারেননি।
* এখন যে কোন সংবাদ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌছাতে সময় প্রয়োজন মাত্র এক সেকেন্ড।
* মক্কার সকল জেলাতে, গ্রামে নিশ্চয় এক দিনে চাঁদের দেখা মেলেনা ; করণ কোথাও কখন ও মেঘযুক্ত আকাশ থাকে, তখন তারা প্রযুক্তির মাধ্যমে অবগত হয় যে আজ চাঁদ দেখা গেছে। তখন তারা এক সাথে সবাই রোজা রাখে।
* ঐ যুগে মক্কাতেই নিশ্চয় ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোজা রাখা হতো, কারণ দেশের এক প্রান্তের চাঁদ দেখার খবর অপর প্রান্তে পৌছানোর কোন প্রযুক্তি ব্যবস্থা ছিল না। অার সেহেতু যে অঞ্চলের আকাশ মেঘ যুক্ত থাকতো, তখন ঐ অঞ্চলের মানুষেরা হয় পরের দিন নয়তো পরের দিনে রোজা রাখতো। (আমার নিজস্ব যুক্তিসঙ্গত ভাবনা)
* মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তো মক্কা, পাকিস্তান, মালেশিয়া বা বংলাদেশ কে আলাদা আলাদা ভাবে বিভক্ত করে দেননি, তাহলে আমরা কেন আল্লাহর অাদেশ নির্দেশগুলো খন্ড খন্ড করে বিভক্ত করে দেখছি ? আল্লাহ তো সমগ্র মানব জাতীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ। এখন আমরা যদি আলাদা করে দেশে দেশে, জেলায় জেলায়, গ্রামে গ্রামে আলাদা ভাবে চাঁদ দেখে রোজা রাখতে চাই, তাহলে একই দেশে ভিন্ন ভিন্ন জেলায় ভিন্ন দিনে রোজা রাখতে হবে। কেননা আজ ঢাকার রাজধানীর আকাশ মেঘ মুক্ত অন্যদিকে যশোর, সাতাক্ষীরা অঞ্চলের আকশ প্রচন্ড মেঘযুক্ত, চাঁদ দেখা গেলনা এ অঞ্চলের মানুষ কি যেদিন চাঁদ দেখবে সেদিন রোজা রাখবে ?
* “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ” এই নির্দেশনা প্রত্যেক ব্যক্তি যদি অলাদা করে ভাবে আর যে ব্যক্তি যেদিন চাঁদ দেখতে পাবে সেই ব্যক্তি সেই দিন রোজা রাখবে ? “তোমরা” বহুবচন এই শব্দের ভিতর যদি পৃথক পৃথক দেশের মানুষ পৃথক ভাবে থাকতে পারে তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তি ও তো এই তোমরা শব্দের ভিতর পৃথক ভাবে থাকতে পারে।
* চাঁদ দেখার সাথে তো পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর বা কোরআন শরিফ নাজিলের রাত্রি সম্পর্কযুক্ত। লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রি অর্থাৎ কোরআন শরিফ নাজিলের রাত্রি কি আমেরিকা, ব্রিটেন এর জন্য এক রাত্রি সৌদি আরবের জন্য ২য় রাত্রি আর বাংলাদেশের জন্য (৩য়) পরের রাত্রি ? হয় শুক্র, শনি, রবি….. যে কোন এক রাত্রিতে তা হয়েছিল সমগ্র বিশ্বের মানব জাতির জন্য । তাহলে কেন আমেরিকানরা শনি বার সৌদিরা রবি বার আর বাংলাদেশের মানুষ সোম বার লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রি খুজি ? এই বিভ্রান্তির সূত্র ধরে কি অমুসলিমরা ইসলাম ধর্মের নিখুত নির্ভুল জিবন ব্যবস্থার মধ্যে হুল ঢুকানোর একটি অনুসঙ্গ হিসেবে লুফে নেবে না ?
* এক বাংলাদেশী ব্যক্তি সৌদি আরবে কর্মরত অবস্থায় মারা গেল। কর্মরত কেম্পানীর রেকর্ডে লেখা থাকলো অমুক লোকটি রোজ রবি বার ৮ই রমজান মৃত্যু বরণ করেছে। লোকটির পরিবার ক্ষতিপুরন চেয়ে দাবীনামায় লিখবে মৃত্যু তারিখ : রোজ রবি বার ৭ ই রমজান। এখানে বার একই কিন্তু তারিখ তো দুই রকম। এই বিভ্রান্তি কি দূর করা উচিৎ নয় ? এই বিভ্রান্তি দূর করার একটা সহজ উপায় : বাংলাদেশ, পাকিস্তান এর দিন বারের নাম এক দিন পিছিয়ে রবি বার কে শনি বার করে দিতে হবে।
* যে সময়কার বিশুদ্ধ কিয়াস দারা এরকম গুরুত্বপূর্ন ফয়সালা হয়েছিল; ঐ সময় রমজানের ১ম তারিখের দিন মক্কাতে রবি বার আর বাংলাদেশে কি বার তা দেখার বা জানার কোন ব্যবস্থা সেই ১৫০০ বছর পূর্বে ছিল না। কারন মক্কা থেকে বাংলাদেশে আসতে সে সময় নিশ্চয় মাসাধিক সময় প্রয়োজন হতো। তাই আমরা পরিশেষে মতামত হচ্ছে- **** বর্তমানে যে সকল আন্তর্জাতিক বিজ্ঞ আলেমগন অাছেন, তিনারা পুনরায় কোন কিয়াস বা পারস্পারিক মতামত বিনিময় করে এই বিভ্রান্তি গুলো দূর করতে যেন সচেষ্ট হন।
জনাব কিন্তু নবী (স) বলেছেন তোমরা চাঁদ দেখে সিয়াম শুরু করো অাবার চাঁদ দেখে সিয়াম ছেড়ে দাও সুতারাং অামরা জানি পৃথীবির সবজাগায় একই দিনে একই সময়ে চাঁদ দেখা যায় না তাহলে কি ভাবে সম্ভব?
আসসালামু আলাইকুম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খোদা হাফেজ।
jajakallaho khairan
Mobile theke porer page a jawar jonno j number a click korte bolchen seta mobile a dekhte pawa jacche na & tika te click korle asche na,
jazakallah khair.