প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান (পর্ব-৪)

প্রশ্নোত্তরে ইসলামী জ্ঞান: (চতুর্থ পর্ব)

বিষয়: হাদীছ শরীফ

191.প্রশ্নঃ হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ নবী (সাঃ)এর কথা, কাজ ও সমর্থনকে হাদীছ বলে।

192. প্রশ্নঃ হাদীছ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ হাদীছ দুপ্রকারঃ মাকবূল (গ্রহণযোগ্য) হাদীছ ও (মারদূদ) অগ্রহণযোগ্য হাদীছ।

193. প্রশ্নঃ মাকবূল হাদীছ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ মাকবূল হাদীছ দুপ্রকারঃ ছহীহ ও হাসান।

194. প্রশ্নঃ মারদূদ বা অগ্রহণযোগ্য হাদীছ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ দুপ্রকারঃ যঈফ (দুর্বল) ও জাল (বানোয়াট)।

195. প্রশ্নঃ সহীহ হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে হাদীছটি নির্ভরযোগ্য ও পূর্ণ স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন, উহার সনদ পরস্পর সম্পৃক্ত, তার মধ্যে গোপন কোন ত্রুটি নেই এবং উহা শাযও (তথা অন্য কোন অধিকতর নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীর বর্ণনার বিরোধী) নয় তাকে সহীহ হাদীছ বলে।

196. প্রশ্নঃ প্রসিদ্ধ হাদীছ গ্রন্থ কয়টি ও কি কি?
উত্তরঃ ৬টি। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে তিরমিযী, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ, সুনানে ইবনে মাজাহ।

197. প্রশ্নঃ সিহাহ সিত্তা বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ হাদীছের ছয়টি গ্রন্থকে বুঝানো হয়। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে তিরমিযী, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসাঈ, সুনানে ইবনে মাজাহ। (বুখারী ও মুসলিমের সবগুলো এবং অন্য কিতাবগুলোর অধিকাংশ হাদীছ বিশুদ্ধ, তাই এগুলোকে একসাথে সিহাহ সিত্তা বা ছয়টি বিশুদ্ধ হাদীছ গ্রন্থ বলা হয়)

198. প্রশ্নঃ সহীহ বুখারীতে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৭০০৮টি। মতান্তরেঃ ৭৫৬৩টি।

199. প্রশ্নঃ সহীহ মুসলিমে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৩০৩৩টি।

200. প্রশ্নঃ সুনানে তিরমিযীতে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৩৯৫৬টি।
201. প্রশ্নঃ সুনানে আবু দাউদে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৫২৭৪টি।

202. প্রশ্নঃ সুনানে নাসাঈতে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৫৭৫৮টি।

203. প্রশ্নঃ সুনানে ইবনে মাজাহতে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ৪৩৪১টি।

204. প্রশ্নঃ হাদীছ গ্রন্থগুলোর মধ্যে কোন কিতাবে সবচেয়ে বেশী হাদীছ সংকলিত হয়েছে?
উত্তরঃ মুসনাদে আহমাদে।

205. প্রশ্নঃ মুসনাদে আহমাদে কতটি হাদীছ রয়েছে?
উত্তরঃ ২৭৭৪৬টি।

206. প্রশ্নঃ ছয়টি প্রসিদ্ধ হাদীছ গ্রন্থ ছাড়া আরো ৫টি হাদীছ গ্রন্থের নাম উল্লেখ কর?
উত্তরঃ মুসনাদে আহমাদ, মুআত্ত্বা মালেক, দারাকুত্বনী, সুনানে দারেমী, সুনানে বায়হাক্বী।
207. প্রশ্নঃ রিয়াযুস্‌ সালেহীন কিতাবটির লিখক কে?
উত্তরঃ ইমাম নভবী।
208. প্রশ্নঃ জাল হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে কথাটি মানুষে তৈরী করেছে, অতঃপর তা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে, তাকে জাল হাদীছ বলে।
209. প্রশ্নঃ আল্লাহর কুরআনের পর সর্বাধিক বিশুদ্ধতম গ্রন্থ কোনটি?
উত্তরঃ সহীহ বুখারী।

210. প্রশ্নঃ সহীহ বুখারীর একটি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ভাষ্য (ব্যাখ্যা) গ্রন্থের নাম কি?
উত্তরঃ হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) প্রণীত ফাতহুল বারী।

211. প্রশ্নঃ কোন দুটি হাদীছ গ্রন্থকে সহীহায়ন বলা হয়?
উত্তরঃ সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম।

212. প্রশ্নঃ মুত্তাফাকুন আলাইহে বলতে কি বুঝানো হয়?
উত্তরঃ যে হাদীছটি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম নিজ নিজ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, সে হাদীছ সম্পর্কে বলা হয় মুত্তাফাকুন আলাইহে।

213. প্রশ্নঃ সুনানে তিরমিযীর একটি প্রসিদ্ধ ভাষ্য (ব্যাখ্যা) গ্রন্থের নাম উল্লেখ কর?
উত্তরঃ তুহফাতুল আহওয়াযী। লেখকঃ আবদুর্‌ রহমান মুবারকপুরী (রহঃ)।

214. প্রশ্নঃ সুনানে আবু দাউদের একটি প্রসিদ্ধ ভাষ্য (ব্যাখ্যা) গ্রন্থের নাম উল্লেখ কর?
উত্তরঃ আউনুল মাবূদ। লেখকঃ শামসূল হক আযীমাবাদী (রহঃ)।
215. প্রশ্নঃ মারফূ হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে হাদীছটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কথা, কাজ বা সমর্থন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তাকে মারফূ হাদীছ বলে।

216. প্রশ্নঃ মাওকূফ হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে হাদীছটি কোন সাহাবীর কথা, কাজ বা সমর্থন বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে মাওকূফ হাদীছ বলে।

217. প্রশ্নঃ মাকতূ হাদীছ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে হাদীছটি কোন তাবেঈর কথা, কাজ বা সমর্থন বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাকে মাক্বতূ হাদীছ বলে।

218. প্রশ্নঃ যঈফ হাদীছের কয়েকটি প্রকার উল্লেখ কর?
উত্তরঃ মুরসাল, মুনকাতে, মুযাল, মুনকার, মাক্বলূব, মুয্‌তারাব ইত্যাদি।

219. প্রশ্নঃ যঈফ হাদীছের উপর আমল করার হুকুম কি?
উত্তরঃ যঈফ হাদীছের উপর আমল করা উচিত নয়।

220. প্রশ্নঃ হাদীছের সনদ বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ হাদীছ বর্ণনার সময় বর্ণনাকারীদের সিলসিলা বা ধারাবাহিকভাবে তাদের নাম উল্লেখকে সনদ বলা হয়।

221. প্রশ্নঃ হাদীছের মতন কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ হাদীছের মূল বক্তব্যটিকে মতন বলা হয়।

222. প্রশ্নঃ কোন খলীফার যুগে সর্বপ্রথম হাদীছ কিতাব আকারে লিপিবদ্ধ করা শুরু হয়?
উত্তরঃ খলীফা ওমর বিন আবদুল আযীযের (রহঃ) যুগে।

223. প্রশ্নঃ হাদীছের গ্রন্থ জগতে সর্বপ্রথম কোন কিতাবটি লিপিবদ্ধ করা হয়?
উত্তরঃ মুআত্ত্বা ইমাম মালেক। এতে ১৭০০টি হাদীছ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

224. প্রশ্নঃ ইমাম বুখারী কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ২৫৬ হিঃ

225. প্রশ্নঃ ইমাম মুসলিম কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ২৬১ হিঃ

226. প্রশ্নঃ ইমাম তিরমিযী কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ২৭৯ হিঃ

227. প্রশ্নঃ ইমাম নাসাঈ কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ৩০৩ হিঃ

228. প্রশ্নঃ ইমাম আবু দাউদ কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ২৭৫ হিঃ

229. প্রশ্নঃ ইমাম ইবনে মাজাহ কখন মৃত্যু বরণ করেন?
উত্তরঃ ২৭৩ হিঃ

230. প্রশ্নঃ ইমাম বুখারীর প্রকৃত নাম কি?
উত্তরঃ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল বুখারী (রহঃ)।

231. প্রশ্নঃ ইমাম মুসলিমের প্রকৃত নাম কি?
উত্তরঃ মুসিলম বিন হাজ্জাজ নিশাপুরী (রহঃ)।

232. প্রশ্নঃ ইমাম তিরমিযীর আসল নাম কি?
উত্তরঃ মুহাম্মাদ বিন ঈসা তিরমিযী (রহঃ)।

233. প্রশ্নঃ ইমাম নাসাঈর নাম কি?
উত্তরঃ আহমাদ বিন শুআইব নাসাঈ (রহঃ)।

234. প্রশ্নঃ ইমাম আবু দাউদের নাম কি?
উত্তরঃ আবু দাউদ সুলাইমান ইবনে আছআছ সিজিসতানী (রহঃ)।

235. প্রশ্নঃ ইমাম ইবনে মাজাহর নাম কি?
উত্তরঃ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ইবনে মাজাহ কাযবীনী (রহঃ)।

236. প্রশ্নঃ বর্তমান যুগের সর্বশ্রে মুহাদ্দিসের নাম কি?
উত্তরঃ শায়খ নাসেরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) মৃত্যু ১৪২০ হিঃ।

আপনার মতামত বা প্রশ্ন লিখুন।

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s